সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য আগের মতো একযোগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে বিভাগভিত্তিক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
আবেদনের জন্য যেকোনো বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতক (সম্মান) পাস হতে হবে। প্রার্থীদের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হতে হবে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স ৩২ বছর। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ আবেদনকারীর বয়স সর্বোচ্চ বয়সসীমার মধ্যে থাকলে ওই প্রার্থী আবেদন করার যোগ্য হবেন।
আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে এ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আবেদন শুরু হবে আগামী ১০ মার্চ থেকে। আবেদনের শেষ সময় ২৪ মার্চ। টেলিটকের সার্ভিস চার্জসহ আবেদন ফি ২২০ টাকা। এই পদে নিয়োগ পেলে বেতন হবে ১৩তম গ্রেডে ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা। অনলাইনে আবেদন করতে সমস্যা হলে এই ই-মেইলে (vas.query@ teletalk.com.bd) অথবা যেকোনো টেলিটক নম্বর থেকে ১২১ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।
সরকারি প্রাথমিক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ অনুসারে, মেধাক্রম অনুযায়ী নির্বাচিত প্রার্থীদের দিয়ে প্রথমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদ পূরণ করা হবে। মেধা তালিকার বাকি প্রার্থীদের প্রাক্-প্রাথমিক শ্রেণির সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।
প্রাথমিকের নিয়োগপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা কমানোর জন্য এবার বিভাগভিত্তিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে আগেই প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত।
শাহ রেজওয়ান হায়াত গত রোববার প্রথম আলোকে বলেন, সারা দেশের জন্য একসঙ্গে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করতে অনেক সময় লাগে। তাই নিয়োগপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা কমানোর জন্য আলাদাভাবে বিভাগভিত্তিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। যে বিভাগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে, সে বিজ্ঞপ্তিতে শুধু ওই বিভাগের প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। এতে নিয়োগ কার্যক্রম দ্রুত শেষ করা সম্ভব হবে।
শাহ রেজওয়ান হায়াত আরও বলেন, দু–তিনটি বিভাগকে একেকটি অঞ্চলে ভাগ করা হবে। এভাবে আটটি বিভাগকে কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করা হবে। একটি অঞ্চলের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের এক সপ্তাহ পর আরেকটি অঞ্চলের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এভাবে আলাদা আলাদা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আলাদাভাবে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। একবারে ফলাফল প্রকাশের চাপ না থাকায় দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যাবে। এতে চাকরিপ্রার্থীরা উপকৃত হবেন।
আজ প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে তিন বিভাগের জন্য শূন্য পদের সংখ্যা উল্লেখ না থাকলেও বর্তমানে সারা দেশে সহকারী শিক্ষক পদে শূন্য পদ প্রায় সাড়ে সাত হাজার বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে জনবল নিয়োগের জন্য সর্বশেষ ২০২০ সালের অক্টোবরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ওই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিন ধাপে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে সহকারী শিক্ষক পদে ৩৭ হাজার ৫৭৪ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়।
প্রাথমিকের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নিয়োগ এ নিয়োগপ্রক্রিয়ার কার্যক্রম দুই বছরেরও বেশি সময় পরে শেষ হয় গত জানুয়ারিতে। বিভাগভিত্তিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করতে আর এত বেশি সময় লাগবে না বলে জানান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।