প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, গ্রেপ্তার ৭ 

জামালপুরে একটি প্রতারক চক্র চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে জনপ্রতি ১০-১৫ লাখ টাকা চুক্তি করে বলে জানায় গোয়েন্দা পুলিশ।

কারাগার

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগে শিক্ষক, চাকরিপ্রার্থীসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া বহিষ্কার করা হয়েছে পাঁচ চাকরিপ্রার্থীকে।

চার জেলা—জামালপুর, কুষ্টিয়া, নওগাঁ ও জয়পুরহাট থেকে প্রথম আলোনিজস্ব প্রতিবেদকপ্রতিনিধিদের পাঠানো খবর থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপে প্রাথমিকের এ নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে শিক্ষকসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। নিয়োগ পরীক্ষায় পাস করানো ও চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সরিষাবাড়ীর পূর্ব বয়ড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আবুল কালাম (৪৮) ও ইসলামপুর উপজেলার কেব্‌ল নেটওয়ার্ক ব্যবসায়ী মো. মোস্তাফিজুর রহমান (৩৬)। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জামালপুর শহরের মির্জা আজম চত্বর থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি-১) ওসি কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, জালিয়াতির ঘটনায় মামলায় গ্রেপ্তার করা ওই দুই ব্যক্তিকে গতকাল কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গ্রেপ্তার দুজনসহ একটি প্রতারক চক্র চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকায় চুক্তি করেন। কারও কারও কাছ থেকে তাঁরা অগ্রিম টাকাও নিয়েছেন। গ্রেপ্তার আবুল কালাম ও মোস্তাফিজের কাছ থেকে নিয়োগ পরীক্ষার তিনটি প্রবেশপত্র, চারটি মুঠোফোন, একটি এটিএম কার্ড ও নগদ এক লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

কুষ্টিয়ায় উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) পরিবর্তন করার অপরাধে সুমন (২৭) নামের এক চাকরিপ্রার্থীকে সাত দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া সেখানে উত্তরপত্রের নিচের অংশ পূরণ না করার কারণে পাঁচ চাকরি প্রার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কুষ্টিয়া কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরীক্ষা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। বহিষ্কৃত চাকরিপ্রার্থীরা হলেন মিরপুর উপজেলার শাহাবুল ইসলাম, শিমুল হোসেন, জনি ইসলাম, সুবাস আলী ও আমিনুল ইসলাম।

এর আগে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসীন উদ্দীন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। দণ্ডিত যুবককে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর ওই পাঁচজনকে বহিষ্কার করেছেন সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রধান।

নওগাঁর মহাদেবপুরে জালিয়াতির অভিযোগে এক চাকরিপ্রার্থীকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের দায়ে তাঁকে এ দণ্ড দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান।

জয়পুরহাটে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারসহ জালিয়াতি বিভিন্ন অভিযোগে তিন চাকরি প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালে তিনটি কেন্দ্র থেকে তাঁদের আটক করা হয়। পরে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাঁদের। এই ব্যক্তিরা হলেন পাঁচবিবি উপজেলার মাহমুদুল হাসান, মোস্তাকিম হোসাইন ও আক্কেলপুর উপজেলার সানজিদা বেগম।

জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবির গতকাল রাতে বলেন, ওই তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাঁদের আদালতে পাঠানো হবে।