৪০তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে যোগ্য প্রার্থীর অভাবে খালি ৬১৫ পদ

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)
ফাইল ছবি

৪০তম বিসিএসের নন-ক্যাডারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ৪ হাজার ২৭২টি পদের জন্য আবেদন চেয়েছিল সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। প্রকাশিত ফলে সুপারিশ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬৫৭ জনকে। যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় বাকি ৬১৫টি পদে কাউকে সুপারিশ করতে পারেনি পিএসসি।

যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া ৬১৫টি পদের মধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তার ১৭৮টি পদ ফাঁকা রয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তার ১ হাজার ৩৪২টি পদের জন্য আবেদন চেয়েছিল পিএসসি। কিন্তু যোগ্য প্রার্থীর অভাবে ১ হাজার ১৬৪টি পদের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া টেকনিক্যাল পদগুলোতেও যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যায়নি।

কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন যোগ্য প্রার্থীর অভাবে ৭টি আর্কিটেকচার অ্যান্ড ইন্টেরিয়র ডিজাইন ইনস্ট্রাক্টর পদ ফাঁকা, ৩টি টেক/মেকাট্রনিকস ইনস্ট্রাক্টর পদ ফাঁকা। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে বাংলা ইনস্ট্রাক্টরের পদ ফাঁকা ৩১টি, গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান ইনস্ট্রাক্টরের ফাঁকা পদ ৬৩টি, টেক/জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস ইনস্ট্রাক্টরের ফাঁকা পদ ৩৪টি, টেক/আইটি সাপোর্ট অ্যান্ড আইওটি বেসিকস ইনস্ট্রাক্টরের ফাঁকা পদ ২৫টি, টেক/জেনারেল ইলেকট্রনিকস ইনস্ট্রাক্টরের ফাঁকা পদ ১১টি, টেক/মেশিন অপারেশন বেসিকস ইনস্ট্রাক্টরের ফাঁকা পদ ২০টি, টেক/রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং ইনস্ট্রাক্টরের ফাঁকা পদ ১১টি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির একটি সূত্র প্রথম আলোকে বলেন, নন-ক্যাডারে প্রার্থীদের ৩০টি পদের পছন্দ দেওয়ার সুযোগ থাকলেও কেউ কেউ একটি, দুটি বা তিনটি পদের জন্য চয়েস লিস্ট দিয়েছিলেন। কয়েকটি পদে আবেদন বেশি ছিল। কিন্তু বাকি পদগুলোতে আবেদন কম। প্রার্থীদের যোগ্যতার সঙ্গে তাঁদের সেই বাছাই করা পদগুলোর সামঞ্জস্য হয়নি। তাই এ অবস্থায় অনেকে মেধায় এগিয়ে থাকলেও তাঁদের নিয়োগের সুপারিশ করা যায়নি। আরেকটি কারণ হচ্ছে, কিছু পদের সঙ্গে আবেদনকারীদের যোগ্যতার সামঞ্জস্য হয়নি। ধরা যাক, কেউ কেউ কারিগরি কোনো পদে আবেদন করেছিলেন। সেটির সঙ্গে তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতার মিল নেই। তাঁরাও নিয়োগের সুপারিশ পাননি।

নন-ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রার্থী বলেন, যাঁরা ইতিমধ্যে ভালো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তাঁরা নন-ক্যাডারে শুধু আকর্ষণীয় পদগুলোতে আবেদন করেছিলেন। ১১তম ও ১২তম গ্রেডের অনেক পদে আগ্রহ দেখাননি তাঁরা, সেসব পদ ফাঁকা পড়ে আছে। একটা চাকরি পেয়ে যদি প্রার্থীরা সন্তুষ্ট থাকতেন, তাহলে পদগুলো এভাবে ফাঁকা থাকত না। অন্য বেকারদের কর্মসংস্থান হতো।

পিএসসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা-২০২৩-এর বিধান অনুযায়ী প্রার্থীদের সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশনের কাছ থেকে সুপারিশপ্রাপ্তির পর নিয়োগসংক্রান্ত সব বিধিবিধান ও আনুষ্ঠানিকতা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করবে।

সুপারিশের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা, মেধাক্রম এবং সংশ্লিষ্ট পদের নিয়োগবিধির শর্ত অনুসরণ করা হয়েছে। প্রার্থীর আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রদত্ত তথ্য, ডকুমেন্টস, সনদ ইত্যাদি এবং আবেদনপত্রে প্রার্থীর প্রদত্ত অঙ্গীকারনামার ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন কর্তৃক এই শর্তে প্রার্থীদের অনুকূলে সুপারিশ করা হলো যে নিয়োগের পূর্বে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, অন্যান্য ডকুমেন্টের সত্যতা যাচাই, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রার্থীর উচ্চতা, বুকের মাপ, ওজন-সম্পর্কিত তথ্য এবং সুপারিশের পূর্ববর্তী জীবনবৃত্তান্ত যথাযথ এজেন্সি কর্তৃক যাচাইয়ের পর নিশ্চিত হয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নিয়োগ প্রদান করতে হবে।