চার বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন কার্যক্রম চলার পর চলতি মাসেই ৪০তম বিসিএসের চূড়ান্ত নিয়োগের প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, মাঠপর্যায় থেকে প্রায় সব প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে এসেছে। এখন এ মাসের মধ্যেই ৪০তম বিসিএসে নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীদের চূড়ান্ত নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
ঠিক চার বছর এক মাস আগে ৪০তম বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। কিন্তু এখনো এই বিসিএসের কার্যক্রম শেষ হয়নি। পিএসসি ৬ মাস ১৫ দিন আগে নিয়োগের জন্য প্রার্থী চূড়ান্ত করে দিলেও এখন তাঁদের নিয়োগ দিতে পারেনি সরকার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশি যাচাইয়ের (ভেরিফিকেশন) সব প্রতিবেদন এখনো তারা হাতে পায়নি। এ কারণে নিয়োগ দিতে দেরি হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেছেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশি যাচাইয়ে এর আগে আরও বেশি সময় লেগেছে। এবার তাঁরা কম সময়ের মধ্যে তা শেষ করার চেষ্টা করছেন।
জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নব নিয়োগ শাখার যুগ্ম সচিব সায়লা ফারজানা প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশি যাচাইয়ের কাজ মাঠপর্যায়ে শেষ দিকে। আমরা আশা করছি, এই মাসের মধ্যেই নিয়োগ চূড়ান্ত করা যাবে। এ জন্য আমাদের কর্মকর্তারা সময়ের চেয়েও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন।
২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পিএসসি ৪০তম বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেখানে মোট ১ হাজার ৯০৩ জন ক্যাডার নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়। ওই বিসিএসে আবেদন করেন ৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী। ২০১৯ সালের ৩ মে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে পরীক্ষা দেন ৩ লাখ ২৭ হাজার পরীক্ষার্থী। ওই বছরের ২৫ জুলাই প্রকাশিত ফলাফলে প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন ২০ হাজার ২৭৭ প্রার্থী।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হয় ফেব্রুয়ারিতে। দেশে ওই সময় করোনা মহামারি শুরু হলে খাতা দেখাসহ অন্যান্য কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। প্রায় এক বছর পর গত বছরের ২৭ জানুয়ারি লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ১০ হাজার ৯৬৪ জন পাস করেন। এরপর করোনা পরিস্থিতির কারণে পাঁচবার মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তন করে পিএসসি। এ বছরের ৩০ মার্চ চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ১ হাজার ৯৬৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে পিএসসি।
৪০তম বিসিএস পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত পিএসসির এক সদস্য বলেন, করোনার কারণে শুরুর দিকে অফিসের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে চালু হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হয়েছে। সবাই একসঙ্গে অফিসে যেতে পারেননি। মৌখিক পরীক্ষার সময় করোনা বেড়ে গেলে কার্যক্রম দফায় দফায় থামিয়ে দিতে হয়েছে। এভাবে ৪০তম বিসিএসের কার্যক্রম পিছিয়ে পড়ে। ওই সদস্য জানান, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে করোনা মোকাবিলায় ৪২তম বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে ৪ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়। তখন ৪০তম বিসিএসের কার্যক্রমের গতি কিছুটা থেমে যায়।