৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল আজ বৃহস্পতিবারই প্রকাশিত হতে পারে। সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) আজ বিশেষ সভা ডেকেছে। সাধারণত ফলাফল প্রকাশের আগে পিএসসি এ ধরনের সভা ডাকে। পিএসসির সূত্র প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
৪৬তম বিসিএসের কয়েকটি প্রশ্ন ভুল ছিল, সে জন্য কারও নম্বর কাটা যাবে না বা কেউ বঞ্চিত হবেন না। শতভাগ নিশ্চিত হয়ে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন প্রথম আলোকে গতকাল বুধবার সকালে এসব কথা বলেছেন।
চেয়ারম্যান বলেন, ‘ভুল প্রশ্নের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকারক ও মডারেটরদের সঙ্গে বসেছিলাম। এ ছাড়া অন্য বিশেষজ্ঞদের মতামতও নিয়েছি। কিছু প্রশ্নে ভুল পাওয়া গেছে। প্রতিটি পরীক্ষায়ই কিছু ভুল হয়। এ ধরনের ক্ষেত্রে পিএসসি আগেও এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, যাতে কোনো পরীক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হননি। এবারও একই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং দ্রুত ফল প্রকাশের চেষ্টা চলছে। ভুল প্রশ্নের জন্য কোনো নম্বর কাটা যাবে না। পিএসসি কাউকে বঞ্চিত করবে না। বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত করেই ফল প্রকাশ করা হবে।’
পিএসসির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘প্রশ্নের ভুলের দায় আমাদেরই নিতে হয়; যদিও প্রশ্নপত্রে কী আছে, তা পরীক্ষার হলে প্রশ্নপত্র বিতরণের আগে আমরা জানতে পারি না। প্রশ্নকারকেরা প্রশ্ন করে গোপনীয়তা নিশ্চিতকরণপূর্বক খাম বন্ধ করে পিএসসিতে জমা দেন। মডারেটররা সে খাম খুলে মডারেশন করে একইভাবে পাণ্ডুলিপির খাম বন্ধ করে পিএসসিতে জমা দেন। এ অবস্থায় খামগুলো ছাপাখানায় পাঠানো হয়। এ প্রক্রিয়ায় ছয় সেট প্রশ্ন ছাপা হয় এবং গোপনীয়তা নিশ্চিতকরণপূর্বক প্যাকেটজাত ও সময়মতো ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে পুলিশি প্রহরায় পরীক্ষার হলে প্রেরণ করা হয়। কোন সেটে পরীক্ষা হবে, পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩০ মিনিট আগে তা দেশের দুজন বিশিষ্ট নাগরিকের উপস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। প্রশ্নকারক, মডারেটর বা পিএসসিসহ কেউই জানে না কোন সেটে পরীক্ষা হবে।’
সোহরাব হোসাইন বলেন, যাতে ভুল না হয়, সে জন্য প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের লিখিত ও মৌখিক—উভয়ভাবেই সব সময়ই অনুরোধ করা হয়। তিনি আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য আমরা আরও সতর্ক হব এবং প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিনীতভাবে অনুরোধ করব, প্রশ্ন যথাযথ মানের ও নির্ভুল হয়েছে মর্মে নিশ্চিত হয়ে যেন তাঁরা প্রশ্নপত্র জমা দেন।’
গত ২৬ এপ্রিল ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন কেন্দ্রে চাকরিপ্রার্থীরা অংশ নেন। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২০০ নম্বরের এ পরীক্ষা হয়।
৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারিতে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৫৬১ প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। পরীক্ষা দেননি ৮৩ হাজার ৪২৫ জন। উপস্থিতির হার ৭৫। পিএসসি সূত্র প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এ বিসিএসে ৩ হাজার ১৪০টি পদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নেওয়া হবে স্বাস্থ্য ক্যাডারে। এ ছাড়া সহকারী সার্জন ১ হাজার ৬৮২ জন, সহকারী ডেন্টাল সার্জন ১৬ জন নেওয়া হবে। এরপর সবচেয়ে বেশি নেওয়া হবে শিক্ষা ক্যাডারে। বিভিন্ন বিষয়ে এ ক্যাডার থেকে বিসিএস শিক্ষায় ৫২০ জন নেওয়া হবে।