এ বছরে সরকার তিন ধাপে ছয় হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিতে চায়। কিন্তু নির্বাচনের পর এ নিয়োগে গতি আসেনি। সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক নির্দেশনা পায়নি। আর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, নতুন মন্ত্রী যোগদান করেছেন, তিনি এ বিষয়ে দ্রুতই কাজ শুরু করতে পারেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসি সূত্র জানিয়েছে, সরকার যে তিন ধাপে ছয় হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিতে চায়, এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক প্রস্তাব পায়নি। এ ধরনের প্রস্তাব সাধারণত মন্ত্রণালয় থেকে এলে পিএসসি তা কীভাবে নেবে, তা ঠিক করা হয়। যেহেতু কোনো প্রস্তাব আসেনি, তাই এ বিষয়ে পিএসসিতে কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের শেষ দিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিকিৎসক নিয়োগসংক্রান্ত একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তিন ধাপে ছয় হাজার চিকিৎসক নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ওই সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উপস্থিতিতে চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকেরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রণালয় জানায়, দেশের উপজেলাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসকের সংকট কাটাতে চলতি বছরেই ছয় হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিতে চায় সরকার। তিন ধাপে এই নিয়োগ হওয়ার কথা জানিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে চিকিৎসকের সংকট আছে। করোনার মধ্যে একবার ৩৯তম বিসিএস থেকে বিশেষভাবে পাঁচ হাজারের বেশি চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এরপর বিভিন্ন সাধারণ বিসিএসে চিকিৎসক নিয়োগ দিলেও সেটি ছিল সংখ্যায় কম। সর্বশেষ ৪৬তম বিসিএসে চিকিৎসক নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। এই বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে প্রায় ১ হাজার ৭০০ চিকিৎসক নিয়োগের কথা রয়েছে।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর নিপসম অডিটরিয়ামে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘চিকিৎসক-সংকটের কারণে উপজেলা হাসপাতালগুলোয় সাধারণ মানুষ যথাযথ চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয় আট ঘণ্টা সেবা দেওয়া হচ্ছে। এখনো আমাদের ৫০ শতাংশ ডেলিভারি বাসায় হচ্ছে। এসব সংকট উত্তরণে নতুন করে শিগগিরই আরও ছয় হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি অনেক কম। এটা বাড়াতে হবে। এখনো ঘরে ৫০ শতাংশ ডেলিভারি হয়। যেখানে প্রশিক্ষিত কেউ থাকেন না। এ ক্ষেত্রে আমাদেরও কিছু করণীয় আছে। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আট ঘণ্টা সার্ভিসে কখনোই চলতে পারে না। ইনস্টিটিউশনাল ডেলিভারি বাড়াতে হলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মঘণ্টা ২৪ ঘণ্টা করতে হবে।’