বাংলাদেশ ব্যাংকের এডি

লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক (এডি) পদের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় যাঁরা উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাঁদের অভিনন্দন। এবার বসতে হবে লিখিত পরীক্ষায়। ১৭ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। উত্তীর্ণ প্রার্থীদের পরিকল্পনামাফিক লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক কাজী আছলাম হোসেন

লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য আগের বছরের প্রশ্নগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। সর্বশেষ কয়েকটি লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করুন। সারা দিন একটি বিষয় নিয়ে বসে থাকবেন না। চেষ্টা করবেন প্রতি সপ্তাহে সব কটি বিষয় একবার করে পড়ার। 

গণিত

লিখিত পরীক্ষায় গণিতে ৩৫ নম্বর থাকে। তাই আগে থেকেই গণিতের প্রস্তুতি নিতে হবে। আগের বছরের প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করে পড়তে হবে। গণিতের যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে সেগুলো হলো সেট, উৎপাদক, সূচক ও লগারিদম, লাভ-ক্ষতি, মুনাফা, বয়সসংক্রান্ত সমস্যা, ঐকিক নিয়ম, কাজ ও সময়, পার্টনারশিপ, গড়, সম্ভাবনা, বিন্যাস ও সমাবেশ, ট্রেন, পরিমিতি ও ঘন-জ্যামিতি।

ফোকাস রাইটিংয়ের জন্য বিশেষ কৌশল

প্রতিদিন একটি পত্রিকা রাখুন এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য (বাণিজ্য ও ব্যাংকসংক্রান্ত) ও কোটেশন সংগ্রহ করে রাখুন। তথ্যবহুল লেখার চেষ্টা করবেন। এতে আপনি অন্যদের তুলনায় এগিয়ে থাকবেন। গুরুত্বপূর্ণ টপিক রিলেটেড কোটেশন সংগ্রহ করুন। চেষ্টা করবেন কোটেশন দিয়ে লেখা শুরু করতে এবং শেষ করতে। ডেটা বা চার্টের ক্ষেত্রে অবশ্যই সোর্স উল্লেখ করবেন। 

ফোকাস রাইটিংয়ের জন্য কিছু বিষয়

স্মার্ট বাংলাদেশ, ভিশন ২০৪১, ক্যাশলেস বাংলাদেশ, ডলার-সংকট, মুদ্রানীতি, আইএমএফ লোন, ডিজিটাল ব্যাংকিং, সর্বজনীন পেনশন, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বাংলাদেশ অর্থনীতিতে এর প্রভাব, গ্রিন ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং, এসডিজি গোল এবং অর্জন, মুদ্রাস্ফীতি, অর্থনীতিতে দেশি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ, এসএমই খাতের সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ, নতুন সুদের হার নীতি, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, ক্রিপ্টোকারেন্সি, আইসিটি খাতে সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ, মোবাইল ব্যাংকিং, ব্লু-ইকোনমি, মেগা প্রজেক্টসমূহ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও উত্তরণ ইত্যাদি।

এ ছাড়া নন-পারফরমিং লোন, অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৩, বাজেট ২০২৩-২৪, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস, মেগা প্রজেক্ট, আরএমজি, আইসিটি, জলবায়ু পরিবর্তন ও সাম্প্রতিক বিভিন্ন ইস্যুর তথ্য সংগ্রহ করবেন। গত ৫ বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি, এফডিআই, রেমিট্যান্স, দারিদ্র্যের হার, চরম দারিদ্র্যের হার, মাথাপিছু আয়, মাথাপিছু জিডিপি, মুদ্রাস্ফীতি, রিজার্ভ ও আমদানি-রপ্তানির পরিসংখ্যান সংগ্রহ করবেন।

সাধারণ জ্ঞান

সাধারণ জ্ঞান অংশে অর্থনৈতিক প্রশ্নের ক্ষেত্রে যেসব পড়তে হবে সেগুলো হলো বাজেট, অর্থনৈতিক সমীক্ষা, মুদ্রানীতি, রেমিট্যান্স, শ্রম অর্থনীতি, পদ্মা সেতু, করোনা অর্থনীতি, রিজার্ভ, ব্যাংক, পর্যটন খাত, বৈশ্বিক অর্থনীতি, তেল বাণিজ্য ও শেয়ারবাজার ইত্যাদি। তথ্যপ্রযুক্তি অংশ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ, তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ, সাবমেরিন, বিদ্যুৎ, টানেল, ইন্টারনেটে বাংলাদেশ, অনলাইন শিক্ষা, ই/এফ/এম-কমার্স, আইটি ইত্যাদি পড়তে হবে। এ ছাড়া মেগা প্রজেক্টস, এসডিজি, রোহিঙ্গা ইস্যু, নারীদের উন্নয়নে ভূমিকা, কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়ন, বঙ্গবন্ধু, জাতিসংঘ, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, কাজী নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ ক্রিকেট, মুদ্রা, বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে পড়তে হবে।

অনুবাদ

ইংরেজি ও বাংলা পত্রিকা বা যেকোনো বই থেকে প্রতিদিন অন্তত দুটি করে অনুবাদ চর্চা করুন। এ ক্ষেত্রে নিয়মিত অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। ইংরেজি পত্রিকা থেকে প্রতিদিন দু-তিনটি কলাম অনুবাদ করার চেষ্টা করুন। আপনার করা অনুবাদ কোনো মেন্টরকে দেখাতে পারেন, তাতে ভুলগুলো সংশোধন হবে। আক্ষরিক অনুবাদ না করে চেষ্টা করবেন ভাবানুবাদ করার। 

আরগুমেন্ট লেখার কৌশল

মনুমেন্টে অন্তত ৪টি ধাপ লেখার মধ্যে থাকতে হবে। প্রথমে ভূমিকা লিখবেন। এরপর পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি দেবেন। শেষে উপসংহার লিখতে হবে। শুরুতে সারমর্ম লিখে আপনি কেন সমর্থন করছেন তার সপক্ষে যুক্তি দেবেন। উপসংহারে প্রাসঙ্গিক যুক্তি উপস্থাপন করে সুন্দর বাক্যে লেখা শেষ করতে হবে।

প্যাসেজ লেখার কৌশল

প্যাসেজ ছোট হলে একবারে পুরোটা পড়ে প্রশ্নগুলোর ধারাবাহিকভাবে উত্তর করতে হবে। আর প্যাসেজ বড় হলে প্রশ্নগুলো একবার পড়ে তারপর প্যাসেজ থেকে প্রশ্নগুলোর উত্তর বের করে ধারাবাহিকভাবে লিখতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্যাসেজ থেকে প্রশ্নগুলোর উত্তর সরাসরি না লিখে সমার্থক শব্দ দিয়ে লেখা যেতে পারে।