৪৬তম বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার আগের রাতে ও পরীক্ষার হলে যা করতে হবে

৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আগামীকাল শুক্রবার। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আগের রাতে ও পরীক্ষার হলে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ৪৩তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকারী শানিরুল ইসলাম শাওন

৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আগামীকাল। পরীক্ষার আগের রাতে টেনশন হওয়া স্বাভাবিক, তবে এ টেনশনকে স্বাভাবিক ধরে নিয়ে তা এক পাশে সরিয়ে রাখতে হবে। রাতে সময়মতো ঘুমাতে যেতে হবে, যেন পর্যাপ্ত ঘুম হয়।

পরীক্ষার আগের সন্ধ্যায় বেশি চাপ নেওয়ার দরকার নেই। আগের পড়া বিষয়ে যেগুলোয় আপনার একটু কনফিউশন থাকে সেসব বিষয়, গণিতের সূত্র বা সংবিধানের ধারাগুলো, হাতে লেখা নোটগুলো হালকাভাবে দেখে নিন।

আগের রাতেই একটা স্বচ্ছ ফাইলে প্রবেশপত্র, মাস্ক, পর্যাপ্ত খুচরা টাকা, দুই-তিনটি কলম, রুমাল বা টিস্যু রাখতে হবে। পরীক্ষার দিন সকালে উঠে গোসল সেরে নিলে বেশ সতেজ লাগবে। পরীক্ষার কেন্দ্র কোথায় পড়েছে, কোন বাসে বা বাহনে কীভাবে যাবেন, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে।

পিএসসির নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। মানিব্যাগ, পার্স, অতিরিক্ত কাগজ, মুঠোফোন বা ডিভাইস, ডিজিটাল রিস্ট ওয়াচ, গয়না ইত্যাদি সঙ্গে নিয়ে বিপাকে পড়ার দরকার নেই। ঘড়ি না নিলেও হয়। কারণ পিএসসি প্রায় সব কক্ষেই দেয়ালঘড়ি নিশ্চিত করে।
পরীক্ষার হলে পেটে ক্ষুধা নিয়ে মগজ একদম স্বতঃস্ফূর্ত থাকবে, এই আশা না করে পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগেই ভালোভাবে নাশতা সেরে নেওয়া উত্তম।

পরীক্ষা শুরুর আগেই ওয়াশরুমের প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নেবেন, যাতে পরীক্ষার দুই ঘণ্টায় এ কাজে সময় ব্যয় করতে না হয়। পরীক্ষা চলাকালে মুখে চুইংগাম চিবানো নার্ভাসনেস কাটানোর একটা ভালো উপায় হতে পারে।

কোনোভাবেই হল ইনভিজিলেটর বা ম্যাজিস্ট্রেট—কারও সঙ্গে বেয়াদবি করবেন না বা তর্কে জড়াবেন না।

কোন সেটের ওএমআর ও প্রশ্ন পেলেন, তা নিশ্চিত হোন। প্রশ্নে ক, খ, গ, ঘ কোন প্যাটার্নে আছে, তা ভালোভাবে লক্ষ করতে হবে।

একটু পুরোনো ব্যবহার করা কলম গোল বৃত্ত ভরাটে সহায়ক। প্রশ্ন পড়ার পর ওএমআরে সংশ্লিষ্ট বৃত্ত ভরাট করুন। পেনসিল দিয়ে দাগানো, পরে আবার কলম দিয়ে বৃত্ত ভরাট করা—এসব সময়ক্ষেপণকারী কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। প্রশ্ন পড়ে যেটা নিশ্চিত হবেন, সেটাই দাগাবেন। না পারলে প্রশ্নের পাশেই একটা ছোট দাগ দিয়ে রাখুন, যাতে পরে না পারা প্রশ্নগুলো সহজেই চিহ্নিত করে তা নিয়ে ভাবা যায়।

পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ১৫ মিনিট আগে হাতে ওএমআর পাবেন। ধীরস্থিরভাবে একাধিকবার দেখে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও আনুষঙ্গিক বিষয় ভরাট করতে হবে। প্রশ্ন ভালোভাবে পড়তে হবে, যাতে ভাষার মারপ্যাঁচ বোঝার চেষ্টা করতে হবে। না বুঝে ভুল দাগানো পরে কষ্টের কারণ হতে পারে। আশপাশে তাকানো, কারও সঙ্গে কথা বলা ও কাউকে উত্তর দেখিয়ে বদান্যতা প্রকাশ থেকে বিরত থাকুন।

প্রশ্নের ১ থেকে ২০০ সিরিয়ালে প্রথমবার পড়া ও দাগানো যেন অবশ্যই ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিটের মধ্যে শেষ হয়। বাকি ৩০ মিনিট না পারা গণিত ও অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর নিয়ে ভাবার জন্য বরাদ্দ থাকবে।

পরীক্ষা শেষের ঘণ্টা বাজলে আর না লেখাই ভালো। পরীক্ষা চলাকালে বারবার মনে রাখবেন, ‘লোভে পাপ আর পাপে মৃত্যু’। অধিক নম্বর পাওয়ার লোভে বা কাট মার্ক ভীতি থেকে বেশি দাগিয়ে নেগেটিভ মার্ক না পাওয়াই ভালো। আপনি বেশি প্রশ্নের উত্তর না পারলে ধরে নেবেন, প্রশ্ন আসলেই কঠিন এবং অন্যরাও আপনার থেকে খুব বেশি পারবে না।

সর্বোপরি মনে রাখতে হবে, শক্তিশালী যোদ্ধারাই যুদ্ধের ময়দানে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। তাই নিজেকে শক্তিশালী যোদ্ধা ভেবে প্রিলিমিনারি যুদ্ধ জয় করুন। আর সব ভালো যার, শেষ ভালো তার।