কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে ২ হাজার ৩৬০ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। যাঁরা এ পদে আবেদন করেছেন, তাঁদের এখন প্রস্তুতির সময়।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদটিকে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বা উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা বা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা বা উপসহকারী প্রশিক্ষক পদও বলা হয়ে থাকে।
আগে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এই পদের নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করত। ২০২০ সাল থেকে সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। আবেদনকারী প্রার্থীদের গোছানো প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ, এই পদের জন্য খুব ভালোভাবে প্রস্তুতি না নিলে এমসিকিউ ধরনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাস করা অনেকটা কঠিন।
পরীক্ষা তিন ধাপে সম্পন্ন হবে। প্রিলিমিনারি ১০০ নম্বরের, লিখিত ২০০ নম্বরের ও মৌখিক পরীক্ষা ৫০ নম্বরের। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে বাংলায় ২০, ইংরেজিতে ২০, সাধারণ জ্ঞানে ২০ ও কৃষিতে ৪০ নম্বর বরাদ্দ। এমসিকিউ পরীক্ষায় প্রতিটি শুদ্ধ উত্তরের জন্য ১ নম্বর বরাদ্দ। ভুল উত্তরের জন্য ০.৫০ নম্বর কাটা যাবে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষায় বসতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় পাস করলে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে।
বাংলা অংশের জন্য কবি–সাহিত্যিকের জীবনাবলি, ইতিহাস ও ব্যাকরণ পড়তে হবে। ইংরেজি অংশের জন্য ইংরেজি ব্যাকরণ পড়তে হবে। সাধারণ জ্ঞানের জন্য বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি পড়তে হবে। দৈনন্দিন বিজ্ঞান অংশের জন্য মাটি, বায়ু, তাপ, খাদ্যের উপাদান, জনস্বাস্থ্য, দূষণ ও কম্পিউটার বিষয় থেকে প্রশ্ন আসে।
আগের বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নগুলো থেকে বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান অংশের প্রশ্নগুলো সমাধান করলে কমন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বইয়ের পাশাপাশি প্রতিদিন পত্রিকা পড়তে হবে। পত্রিকা থেকে আপডেট তথ্য নোট করে রাখবেন।
কৃষিবিষয়ক অংশে ভালো করতে হলে কৃষি ডিপ্লোমা বোর্ড বইগুলো পড়তে হবে। বিশেষ করে মাঠ ফসলের চাষাবাদ, সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনা, ফসলের রোগ ও প্রতিকার, আগাছা ও তা দমন, বীজ প্রযুক্তি, সেচ ব্যবস্থাপনা, ফল চাষ, সবজি চাষ, কৃষি অর্থনীতি, গৃহপালিত পশু ও পাখি পালনের বিষয়গুলো পড়তে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের কৃষি পরিচিতি, কৃষিতাত্ত্বিক ফসলের উৎপাদন প্রযুক্তি, কৃষি সম্প্রসারণ, মৎস্য চাষ ব্যবস্থাপনা, মৃত্তিকাবিজ্ঞান, বন ও বনায়ন, কৃষি বনায়ন ও জীববৈচিত্র্য, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, উদ্ভিদ পুষ্টি ও সার ব্যবস্থাপনা, ফুল ও সুদৃশ্য গাছের চাষাবাদ, জৈব কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, খামার ব্যবস্থাপনা, কৃষি পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, মসলাজাতীয় ফসল চাষ ও সমবায় বিষয়গুলো কৃষি বই থেকে প্রস্তুতি নিলে প্রিলিমিনারি ও লিখিত—দুই অংশ ভালো করা সম্ভব।
লিখিত পরীক্ষায় ২০০ নম্বরের মধ্যে বাংলায় ৪০, ইংরেজিতে ৪০, সাধারণ জ্ঞানে ৪০ এবং কৃষিতে ৮০ নম্বর। বাংলা বিষয়ে ব্যাকরণ ১০, সারমর্ম ৫, বঙ্গানুবাদ ৫, পত্রলিখন ৫, রচনা ১৫। ইংরেজিতে ব্যাকরণ ১০, কম্প্রিহেনশন ১০, চিঠি ১০, রচনা ১৫। সাধারণ জ্ঞান অংশে বাংলাদেশ বিষয়াবলি ১৫ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ১৫। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অংশে ১০ নম্বর। লিখিত বিষয়ে প্রস্তুতির জন্য বিসিএস ও নন-ক্যাডার লিখিত পরীক্ষার বই থেকে প্রস্তুতি নিতে পারেন।
মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য নিজেদের একাডেমিক বই পড়তে হবে। এ ছাড়া আপনার নিজের জেলা, জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি ও জেলায় কৃষিবিষয়ক প্রতিষ্ঠানের নাম জানতে হবে। কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন তথ্য, যেমন বিভিন্ন ফসল, ফসলের জাত এবং ফসলের রোগ—এসব পড়তে হবে।
মো. মনোয়ারুল ইসলাম
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, হাতীবান্ধা, লালমনিরহাট