৪৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা

ইংরেজি বিষয়ে প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা আগামী ২৭ নভেম্বর শুরু হবে। প্রার্থীদের প্রস্তুতির সুবিধার জন্য চাকরি-বাকরি পাতায় লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ প্রথম পর্বে ইংরেজি বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ দিয়েছেন ৪১তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন

ইংরেজি বিষয়ে ভালো করতে মৌলিক জ্ঞান থাকা জরুরি
ছবি: প্রথম আলো

বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় ইংরেজিতে বেশি নম্বর তুলতে পারলে ক্যাডার হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে থাকা যায়। প্রস্তুতির সঠিক কৌশল না জানার কারণে অনেকেই ইংরেজিতে প্রত্যাশিত নম্বর তুলতে পারেন না।

 

নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়া

ইংরেজি পরীক্ষায় ভালো করার প্রধান শর্ত নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়া। প্রতিদিন তিন থেকে চারটি সংবাদ পড়তে হবে। নতুন শব্দগুলো নোট করে বারবার রিভিশন দিতে হবে। কোনো সংবাদ খুব বেশি কঠিন মনে হলে মূলভাব বুঝে নিতে হবে। ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয়, আন্তর্জাতিক, বাংলাদেশ, প্রথম ও শেষ পৃষ্ঠার সংবাদগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। পড়ার সময় কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেলে সেগুলো লিখে রাখবেন। এতে রচনা ও বাংলাদেশ বিষয়াবলির প্রস্তুতিতে কাজে লাগবে। নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করলে রিডিং কমপ্রিহেনশন খুব সহজেই বোঝা যাবে। অনুবাদ করার দক্ষতা বাড়বে। রচনা লেখার মান বেড়ে যাবে।

ইংরেজির শব্দভান্ডার বাড়ানো

ইংরেজির শব্দভান্ডার দু–এক দিনে বাড়বে না, নিয়মিত ১০টি করে নতুন নতুন শব্দ শিখুন। অনেকেই অভিযোগ করেন ইংরেজি শব্দ মনে থাকে না বা খুব দ্রুত ভুলে যান। এ ক্ষেত্রে সমাধান হচ্ছে, প্রতিটি ইংরেজি শব্দ পড়ে বাক্যে ব্যবহার করতে হবে। কিছু ভোকাবুলারির বই আছে, যেগুলোয় প্রতিটি ইংরেজি শব্দের সঙ্গে এর ব্যবহার দেওয়া আছে। শব্দটি বাক্যে কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, সেটি বুঝতে পারলে তা মনে থাকবে। ইংরেজি ভোকাবুলারিতে ভালো দখল না থাকলে অনুচ্ছেদ বুঝতে যেমন সমস্যা হবে, তেমনি অনুবাদ ও রচনা লিখতেও বারবার হোঁচট খেতে হবে।

শুদ্ধ বাক্য গঠন

ইংরেজি বাক্য শুদ্ধভাবে লিখতে হবে। যাঁদের ইংরেজির মৌলিক জ্ঞান ভালো, তাঁরা এ ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন। যাঁরা একটু দুর্বল, তাঁরা ইংরেজি গ্রামার শিখে নেবেন আগেই। ইংরেজি বাক্যে প্রিপজিশন, ফ্রেজ অ্যান্ড ইডিয়মসেরও ব্যবহার বাড়ানো উচিত। তাহলে পরীক্ষক আপনার লেখা পড়ে সন্তুষ্ট হবেন। একই শব্দ একাধিকবার ব্যবহার না করে বিকল্প শব্দের প্রয়োগ ও কমপ্লেক্স বাক্য লেখা উচিত। প্রথমে সাধারণ বাক্য ব্যবহার করলে পরবর্তী সময়ে কমপ্লেক্স বা কম্পাউন্ড বাক্য ব্যবহার করবেন।

রিডিং কমপ্রিহেনশন

ইংরেজি প্রশ্নপত্রের শুরুতেই একটি রিডিং কমপ্রিহেনশন থাকবে। এটি সমসাময়িক যেকোনো আলোচিত বিষয়–সম্পর্কিত হবে। রিডিং কমপ্রিহেনশন থেকে দশটি সাধারণ প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। শুরুতেই প্রশ্নগুলো একবার পড়ে তারপর অনুচ্ছেদটি পড়ুন। প্রশ্ন পড়ে অনুচ্ছেদ পড়লে আপনি সহজেই কাঙ্ক্ষিত উত্তরটি শনাক্ত করতে পারবেন। অনুচ্ছেদের মূলভাবটা বুঝতে পারলেই যথেষ্ট। প্রশ্নের চাহিদা অনুযায়ী তিন থেকে চারটি বাক্যে উত্তর করতে হবে। যদি অনুচ্ছেদটির শিরোনাম দিতে বলে, তাহলে এক থেকে দুটি বাক্যেও উত্তর করতে পারবেন। অনুচ্ছেদ থেকে হুবহু কপি করে উত্তর করা যাবে না।

ইংরেজি ব্যাকরণ–সম্পর্কিত প্রশ্ন

ইংরেজি ব্যাকরণ ও এর ব্যবহার সম্পর্কে ৩০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। অনুচ্ছেদের মধ্য থেকে কিছু শব্দের ব্যাখ্যামূলক অর্থ লিখতে হবে। কিছু শব্দের সমার্থক বা বিপরীতার্থক শব্দ লিখতে হবে এবং সেগুলো দিয়ে অর্থপূর্ণ বাক্য গঠন করতে হবে। কিছু শব্দ বা ফ্রেজ দেওয়া থাকবে, যেগুলো দিয়ে নতুন বাক্য গঠন করতে হবে। পার্টস অব স্পিচের প্রকারগুলোর মাঝে রূপান্তর করতে হবে। কোনো জটিল বা মিশ্র বাক্যকে সরল বাক্যে রূপান্তর করতে হবে। ৩৫তম বিসিএস থেকে ইংরেজি ব্যাকরণ অংশে এ ধরনের প্রশ্ন এসেছে। এগুলো মোটামুটি সবাই উত্তর করতে পারে।

সারমর্ম

ইংরেজি অনুচ্ছেদটিকে ১০০ শব্দের মধ্যে লিখতে হবে। এ জন্য অনুচ্ছেদটি কয়েকবার ভালোভাবে পড়তে হবে এবং নিজের মতো করে মূলভাবটি ফুটিয়ে তুলতে হবে। অনুচ্ছেদের শব্দের বিকল্প শব্দ ব্যবহার করে কিংবা বড় বাক্যকে ছোট ছোট বাক্যে রূপান্তর করে লিখতে পারেন। লেখার মধ্যে ভিন্নতা ও নতুনত্ব নিয়ে আসা জরুরি।

সম্পাদক বরাবর চিঠি

যেকোনো ইংরেজি দৈনিকের সম্পাদক বরাবর একটি চিঠি লিখতে হবে। প্রদত্ত অনুচ্ছেদ–সম্পর্কিত কোনো বিষয় নিয়েই লিখতে বলা হবে। চিঠির ভাষা প্রাঞ্জল ও বৈচিত্র্যময় হওয়া প্রয়োজন। চিঠিতে আপনার বক্তব্য যেন জোরালো ও প্রমাণসাপেক্ষ হয় এবং যুক্তিগুলো যেন ধারালো ও সুতীক্ষ্ণ হয়। চিঠি যেন দুই পৃষ্ঠার বেশি না হয়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।

ইংরেজি রচনা

রচনা সাধারণত দুই ধরনের হয়—তথ্য-উপাত্তভিত্তিক ও বিশ্লেষণমূলক। তথ্য–উপাত্তভিত্তিক রচনায় প্রচুর তথ্য, চার্ট, বিখ্যাত ব্যক্তি বা লেখকের বক্তব্য, পত্রিকা বা জার্নালের রেফারেন্স এবং অন্যান্য পরিসংখ্যান দিতে হয়। বিশ্লেষণমূলক রচনায় যুক্তি, প্রমাণ, যুক্তি খণ্ডন, নিজস্ব মত ও পরামর্শ খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক, জাতীয়, বৈশ্বিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত, শিক্ষা, প্রযুক্তি ও উন্নয়নসংক্রান্ত সব রচনা ভালোমতো পড়ে যেতে হবে। রচনা কমন পাওয়ার চিন্তা না করে সব টপিক সম্পর্কে জেনে যাওয়া উচিত।

অনুবাদ

ইংরেজি বিষয়ে বেশি নম্বর তুলতে হলে অনুবাদে ভালো করার বিকল্প নেই। ইংরেজি থেকে বাংলা এবং বাংলা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদের দক্ষতা এক দিনেই বাড়ানো অসম্ভব। প্রয়োজন নিয়মিত অনুশীলন এবং দীর্ঘ সময়ের সাধনা। অনুবাদের ক্ষেত্রে আক্ষরিক না করে ভাবানুবাদ করতে হবে। কোনো বাক্য বেশি বড় মনে হলে ভেঙে ভেঙে অনুবাদ করবেন।