১৫তম শিক্ষক নিবন্ধনের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হবে ১২ নভেম্বর থেকে। মৌখিক পরীক্ষার জন্য ২০ নম্বর বরাদ্দ আছে। এর মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের জন্য ১২ নম্বর ও জ্ঞান প্রকাশের ক্ষমতার জন্য ৮ নম্বর। যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে উভয় অংশে পৃথকভাবে ৪০ শতাংশে বেশি নম্বর পেতে হবে। যোগ্য ও উত্তীর্ণ প্রার্থীরা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল-কলেজে পদ খালি থাকা সাপেক্ষে মেধাভিত্তিক নিয়োগ পাবেন।
সব ধরনের চাকরি পরীক্ষায় মৌখিক পরীক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এই পরীক্ষায় উপস্থিত না হলে তাঁকে চাকরির জন্য বিবেচনা করা হয় না। তাই মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। আবার চাকরি পেতে হলে মৌখিক পরীক্ষায় সফল হওয়াও আবশ্যক। যদিও মৌখিক পরীক্ষার জন্য
বাধাধরা কোনো নিয়ম নেই; কিন্তু পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য কিছু অলিখিত কিছু বিষয় আছে, যা অতিক্রম করতে হয়।
অতীতে শিক্ষক নিবন্ধন মৌখিক পরীক্ষার প্রশ্ন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রার্থীদের নিজের পরিচয়, নিজ জেলা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। তাই এই বিষয়ে পর্যাপ্ত ধারণা রাখতে হবে। এরপর সাধারণত প্রার্থীদের বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। যেমন কোনো প্রার্থী যদি অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করেন, তবে তাঁকে অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট মৌলিক বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। এ ছাড়া কিছু সাধারণ বিষয় আছে, যেখান থেকে পরীক্ষক প্রশ্ন করেন। এই রকম কিছু বিষয় হলো বাংলাদেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সংবিধান, বাংলাদেশের কৃষি, অর্থনীতি ও বাণিজ্য, শিক্ষানীতি, শিক্ষাসংক্রান্ত বিভিন্ন সূচক, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক স্থান, জাতীয় স্থাপনা, স্থাপত্য, বাংলাদেশের ভৌগোলিক পরিচয়।
বিশেষ করে খেয়াল রাখতে হবে, যেহেতু নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, সেহেতু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ দিন ও ঘটনাবলি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। যেমন জাতীয় চার নেতা হত্যা, সশস্ত্র বাহিনী গঠন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ কৌশল, বিশ্ব সম্প্রদায় কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান, বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভ সম্পর্কে ভালো করে জানতে হবে। বাংলাদেশ ও বহির্বিশ্বের চলতি ঘটনাবলি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। যেমন: ডেঙ্গু জ্বর, রোহিঙ্গা ইস্যু, সিরিয়া ইস্যু, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নাম প্রত্যাহার প্রভৃতি।
সরকারের গৃহীত ১০টি মেগা প্রকল্প, বর্তমান সরকারের বিভিন্ন অর্জন সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।
যাঁরা প্রথমবার মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেবেন, তাঁদের জন্য পরামর্শ হলো—
প্রথমত, প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র সঙ্গে রাখুন এবং মৌখিক পরীক্ষার প্রবেশপত্র সঙ্গে রাখুন।
দ্বিতীয়ত, মার্জিত পোশাক পরে যথাসময়ে পরীক্ষা-স্থানে উপস্থিত হোন। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিন।
তৃতীয়ত, যেহেতু পরীক্ষাটি হলো শিক্ষক হওয়ার, তাই এদিকের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। একজন আদর্শ শিক্ষক হতে হলে কী কী যোগ্যতা ও গুণ থাকা দরকার, তার প্রতি দৃষ্টি দিন এবং সেভাবে প্রস্তুতি নিন।
চতুর্থত, মৌখিক পরীক্ষা বোর্ডের সামনে নিজেকে ভদ্র, মার্জিত ও বিনয়ী হিসেবে উপস্থাপন করুন।
পঞ্চমত, সাবলীলভাবে ও গুছিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিন। উত্তর না জানলে কোনো ভণিতার আশ্রয় নেবেন না। মনে রাখবেন, সব প্রশ্নের উত্তর পারতে হবে, এমন কোনো বিষয় নেই।
লেখক: ক্যারিয়ার পরামর্শক