পঞ্চদশ বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (১৫ শ বিজেএস) পরীক্ষার মাধ্যমে এবার নিয়োগ পাবেন ১০০ জন। ইতিমধ্যে আবেদন শেষ হয়েছে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার দিনগণনা শুরু করেছেন পরীক্ষার্থীরা। শেষ সময়ের জন্য অপক্ষো না করে প্রিলি পাস করতে এখনই ভালোভবে প্রস্তুতি নিতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রাকযোগ্যতা হিসেবে সব প্রার্থীকেই প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রার্থীদের ১০০ নম্বরের প্রাথমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। এটি প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নামে পরিচিত। এ পরীক্ষায় মোট ১০০টি এমসিকিউ থাকবে। প্রতিটি এমসিকিউয়ের মান ১ নম্বর। তবে প্রতিটি এমসিকিউয়ের ভুল উত্তরের জন্যে ০.২৫ নম্বর কাটা হবে।
প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর ৫০। সাধারণ বাংলা, সাধারণ ইংরেজি, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়, সাধারণ গণিত, দৈনন্দিন বিজ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা এবং আইন বিষয়ের ওপর প্রশ্ন করা হয়। এই পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর প্রার্থীর লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে যোগ করা হবে না। এ পরীক্ষা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘তথ্য, নির্দেশনা ও বিস্তারিত সিলেবাস’ বইয়ের প্রথম অধ্যায়ের ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণনা করা আছে। সেটা দেখে নিতে পারলে প্রস্তুতি সুন্দর হবে।
পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে প্রথমে একটা দিনকে ভাগ করে নিন। রুটিনমাফিক পড়ুন। কখন ঘুমাবেন, কখন খাবেন ও কখন পড়বেন, তা নির্দিষ্ট করে নিন। রিভিশনের জন্য সময় হাতে রেখে বাকি দিনগুলোয় আইন বিষয় ও সাধারণ বিষয় পড়ার জন্য ভাগ করে নিন।
একটি আইনকে কয় দিনে শেষ করবেন, তা ঠিক করে নিলে পড়ায় গতি আসে। খেয়াল রাখতে হবে যেন নিয়মিত পড়া হয়। এক দিন ১৮ ঘণ্টা পড়ে বাকি দিন কম পড়ার চেয়ে প্রতিদিন পড়াটা বেশি কাজে আসে।
আগের বছরের প্রশ্নগুলোর সমাধান প্রস্তুতির শুরুতেই করতে হবে। সেসব প্রশ্ন দেখে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নোট করে নির্দিষ্ট করে রাখতে হবে। ছোট আইনগুলো আগে পড়া দরকার। বড় আইন যেমন দেওয়ানি কার্যবিধি ১৯০৮ বা ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ শেষ করতে যে সময় লাগে, ওই একই সময়ে ছোট ছোট আইন যেমন ঐচ্ছিক আইন, ভূমি আইন ও পারিবারিক আইন শেষ করা যায়। এতে মানসিক চাপ কমে। বিজেএস পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার মধ্যে খুব কম সময় থাকে বলে আইনগুলো আগে থেকে পড়া থাকলে সুবিধা পাওয়া যায়।
প্রিলিতে সাধারণ বিষয়াবলি থেকে আইনের তুলনায় কম প্রশ্ন আসে। দিনের একটি অংশ সাধারণ বিষয়গুলো পড়ার জন্য রাখা উচিত। প্রতিদিন গণিত চর্চা করতে হবে। বাংলা, বিজ্ঞান ও বাংলাদেশ বিষয়াবলির জন্য ৮ম-১০ম শ্রেণির পাঠ্যবই খুব গুরুত্বপূর্ণ। গণিতের জন্য ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো অনুশীলন করতে হবে। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ের জন্য দৈনিক পত্রিকা ও চাকরির প্রস্তুতি সহায়ক চলতি ঘটনা পড়তে হবে। এ ছাড়া আগের বছরের প্রশ্নপত্রগুলোর সমাধান ও ব্যাখ্যাগুলোয় চোখ বোলাতে হবে।
পরীক্ষার্থীদের মধ্যে একটি বড় অংশ যে সমস্যার কথা বলে, তা হলো মনে রাখতে না পারা। এত বেশি আইন, ধারা ও তথ্য মনে না রাখতে পারাটাই স্বাভাবিক। তাই ভালো প্রস্তুতির জন্য নিয়মিত বারবার পড়তে হবে। যত বেশি রিভিশন দেবেন, তত মনে থাকবে। তাই একটি আইন বা যেকোনো বিষয় শেষ করে তা সম্পূর্ণ ভুলে যাওয়ার আগে রিভিশন দেওয়া উচিত। অবশ্য অনেকে সব পড়া শেষ করে রিভিশন দেয়। আইন বা সাধারণ বিষয়—সবকিছুর ক্ষেত্রে রিভিশনের জন্য সময় রাখতে হবে।
কার্যকর প্রস্তুতির জন্য নিয়মিত মডেল টেস্ট দিতে হবে। এতে কেমন প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তা বোঝা যায়। কিন্তু মডেল টেস্টে কম নম্বর পেলে হতাশ হওয়া যাবে না। মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে। শুধু পড়লেই হবে না, পর্যাপ্ত ঘুমাতেও হবে। ঘুমের কথাটা এখানে অবান্তর মনে হলেও একটি সুন্দর প্রস্তুতির জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। পরীক্ষার হলে এক ঘণ্টার সদ্ব্যবহার করুন। মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখুন। সবার জন্য শুভকামনা।