সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য আগের মতো একযোগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে এবার বিভাগভিত্তিক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হচ্ছে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসেই বাকি পাঁচ বিভাগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ময়মনসিংহ, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এরপর ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের প্রার্থীদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তিগুলো প্রকাশ করা হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তিন ভাগে সব বিভাগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ শেষে পরীক্ষা নেওয়া শুরু হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য এবার বিভাগভিত্তিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হচ্ছে।
তিন বিভাগের জন্য প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে যেমন শূন্য পদের সংখ্যা উল্লেখ ছিল না, তেমনি বাকি পাঁচ বিভাগের জন্য প্রকাশিতব্য বিজ্ঞপ্তিতেও শূন্য পদ থাকবে না। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৭ হাজার ৪৬৩টি। তবে পদের এই সংখ্যা বাড়বে। কারণ, নিয়োগ কার্যক্রম চলাকালীন আরও শিক্ষক অবসরে যাবেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ অনুসারে আগের মতো কোটাপদ্ধতি মেনে এবারও সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ অনুসারে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগ বিধিমালায় কোটার বিষয়ে যেভাবে বলা আছে, তা অনুসরণ করে প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হবে।
নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯–এ বলা হয়েছে, সহকারী শিক্ষক পদে ৬০ শতাংশ নারী কোটা, ২০ শতাংশ পোষ্য কোটা ও ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা। এই ৩ কোটার প্রতিটি ক্যাটাগরিতে অবশ্যই ২০ শতাংশ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। তবে এভাবে তিন কোটায় বিজ্ঞান বিষয়ের যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে।
নারী, পোষ্য ও পুরুষ কোটা পূরণের ক্ষেত্রে আপাতত বলবৎ অন্য কোনো বিধি বা সরকারি সিদ্ধান্তে কোনো বিশেষ শ্রেণির কোটা নির্ধারিত থাকলে সেই কোটাসংক্রান্ত বিধান অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
প্রাথমিকের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নিয়োগপ্রক্রিয়ার কার্যক্রম দুই বছরের বেশি সময় পর শেষ হয় গত জানুয়ারিতে। সেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিন ধাপে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে সহকারী শিক্ষক পদে ৩৭ হাজার ৫৭৪ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। তবে এর মধ্যে ২ হাজার ৫৫৭ জন চাকরিতে যোগ দেননি। এর ফলে এ পদগুলো শূন্য থেকে যায়। প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ এ নির্বাচিত প্রার্থীদের জন্য প্যানেল রাখার কথা বলা নেই, তাই প্রাথমিকের নিয়োগে প্যানেল করার সুযোগ নেই বলে জানায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।