অনলাইনে কারিগরি মান উন্নয়নের কাজ করার জন্য চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির পুলিশ ভেরিফিকেশনের ভি-রোল ফরম ছাড়তে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এনটিআরসিএ বলছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ অনলাইন পুলিশ ভেরিফিকেশনের এ কাজ তদারক করছে। তারা এবারই এটি প্রথম করছে, তাই দেরি হচ্ছে। তবে এটি এ সপ্তাহে চালু করা যেতে পারে।
শিক্ষক নিয়োগের চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচিত ৩২ হাজার ৪৩৮ প্রার্থীর চূড়ান্ত নিয়োগের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশন সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছে এনটিআরসিএ। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এবার নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন অনলাইনে করার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এটি করা গেলে অল্প সময়েই নিয়োগ পাবেন নির্বাচিত প্রার্থীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. এনামুল কাদের খান প্রথম আলোকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ অনলাইন পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিষয়টি দেখছে। তারাই মূলত এ কাজ করে। যেহেতু এটা একটি নতুন উদ্যোগ।
এতে নানা কারিগরি বিষয় আছে। সেগুলোর উন্নয়ন করতে সময় লাগছে। আশা করা যাচ্ছে, এ সপ্তাহের মধ্যেই কারিগরি উন্নয়নের সব দিক শেষ করে পুলিশ ভেরিফিকেশন চালু করা যাবে। তারা এ সপ্তাহের মধ্যেই একটি লিংক তৈরি করে এনটিআরসিএকে দেবে। সেখান থেকে প্রার্থীরা অনলাইনে পুলিশ ভেরিফিকেশনের আবেদন করতে পারবেন। চলতি সপ্তাহে এটি শুরু করা সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করেন এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান।
এনামুল কাদের আরও বলেন, ‘নির্বাচিত প্রার্থীরা যাতে অনলাইনে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য আবেদন করতে পারেন, সে জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। মন্ত্রণালয় একটি অনলাইন লিংক তৈরি করে আমাদের দেবে। সেখান থেকে প্রার্থীরা যথাযথ তথ্য দিয়ে লগইন করতে পারবেন এবং প্রার্থীর দরকারি কাগজপত্র আপলোড করতে পারবেন। সেই কাগজপত্র যথাযথ কর্তৃপক্ষ দেখে অনলাইনে ভেরিফিকেশন করতে পারবেন।’
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কয়েকজন প্রার্থী প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত কয়েক বছরে প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশনে অনেক বেশি সময় লেগে গেছে। এমনও হয়েছে, এ কারণে অনেকের নিয়োগ-জটিলতা দেখা দিয়েছে। এ প্রক্রিয়া যদি অনলাইনে হয়, তাহলে অনেক কষ্ট ও ভোগান্তি কমে আসবে এবং নিয়োগ দ্রুত হবে। আমরা অনলাইনে ভেরিফিকেশনের প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানাই। আমরা চাই, এবার থেকেই এ নিয়ম বাস্তবায়িত হোক।’
সম্প্রতি চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। ফলাফলে ৩২ হাজার ৪৩৮ প্রার্থীকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এনটিআরসিএর এক বিজ্ঞপ্তিতে ফলাফল প্রকাশের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ৩২ হাজার ৪৩৮ প্রার্থীকে নির্বাচিত করা হয়েছে। প্রাথমিক নির্বাচনের ফলাফল এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি নামের সেবা বাক্সে পাওয়া যাচ্ছে।
এ ছাড়া নির্বাচিত প্রার্থী ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের খুদে বার্তার মাধ্যমে ফল জানানো হয়েছে। নির্বাচিত প্রার্থীরা নিজ নিজ আবেদন আইডি ও মুঠোফোন নম্বর দিয়ে লগইন করে ফলাফল দেখতে পারবেন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা নিজ নিজ ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে তাঁর প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত প্রার্থীর তথ্য দেখতে পারবেন। কোনো নির্বাচিত প্রার্থী কিংবা প্রতিষ্ঠানপ্রধান টেকনিক্যাল কারণে খুদে বার্তা না পেলে এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটের চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি ২০২২ সেবা বাক্স থেকে প্রাথমিক নির্বাচনের ফলাফল দেখতে পারবেন।
নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম অনলাইনে পূরণের কথাও বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম (ভি-রোল) অনলাইনে পূরণ করে জমা দিতে হবে। ফরম জমা দেওয়া–সংক্রান্ত নির্দেশনা পরবর্তী সময় এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি ও নির্বাচিত প্রার্থীর মুঠোফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে জানানো হবে।
২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর ৬৮ হাজার ৩৯০ শিক্ষক নিয়োগের চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ।