বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও কর্মচারী পদে ৩৫ বছরের বেশি বয়সী প্রার্থীদের আবেদনের কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। গত বৃহস্পতিবার এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষক–কর্মচারীদের চাকরিতে প্রথম প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর। কিন্তু ৩৫ বছরের বেশি বয়সী নিবন্ধন সনদধারী কিছু প্রার্থী নিয়োগ আবেদনের সুযোগ চেয়ে এনটিআরসিএ বরাবর আবেদন দাখিল করছেন। তবে ৩৫ বছরের বেশি বয়সীদের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চাকরিতে আবেদনের সুযোগ নেই।
এনটিআরসিএ বলেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮–এর ১১.৬ অনুচ্ছেদ, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮–এর ১১.৬ এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা) জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮–এর ১৪.৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক পদে আবেদনের সর্ব্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর নির্ধারণ করা হয়।
ওই অনুচ্ছেদে বর্ণিত বয়সসীমার বিরুদ্ধে নিবন্ধনকৃত প্রার্থীরা হাইকোর্ট বিভাগে রিট মামলা (নম্বর-১৩৯/২০১৯) করেন। মামলায় ২০১৯ সালের ২২ মে রায়ে আদেশ হয়, যে তারিখে সরকার বয়সসীমা নির্ধারণ করেছে, তার আগে যাঁরা নিবন্ধন সনদ অর্জন করেছেন, তাঁদের জন্য বয়সসীমা প্রযোজ্য হবে না। ওই তারিখের পরে যাঁরা নিবন্ধন সনদ অর্জন করেছেন, তাঁদের জন্য বয়সসীমা প্রযোজ্য হবে।
৩৫ বছরের বেশি বয়সীদের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চাকরিতে আবেদনের সুযোগ নেই।
এ রায়ের বিরুদ্ধে এনটিআরসিএর পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল (মামলা নম্বর ৩৯০০/২০১৯) দায়ের করা হয়। সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল মামলায় গত বছরের ১১ অক্টোবর রায়ে হাইকোর্টের রিট পিটিশন নম্বর ১৩৯/২০১৯–এর ২০১৯ সালের ২২ মের রায় রহিত করা হয়। সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিলের রায়ের বিষয়ে অধিকতর স্পষ্ট হওয়ার জন্য এনটিআরসিএর পক্ষ থেকে আইন ও বিচার বিভাগের মতামত চাওয়া হয় এবং সুপ্রিম কোর্টে একটি রিভিউ মামলা (৫৪/২০২২) করা হয়। ইতিমধ্যে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের মতামত পাঠানো হয়। এতে জানানো হয়, আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রিট পিটিশন নম্বর-১৩৯/২০১৯–এর অপারেটিভ পার্ট কর্তন করে রায় প্রদান করেন।
কাজেই আপিল বিভাগের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে রিট পিটিশন নম্বর-১৩৯/২০১৯-এর ২০১৯ সালের ২২ মের রায়ের সামগ্রিক কার্যকারিতা রদ-রহিত করা হয়েছে। আপিল বিভাগের রায়ে হাইকোর্ট বিভাগের প্রদত্ত নির্দেশনা বহাল নেই এবং বর্তমানে বিদ্যমান নীতিমালার আলোকে ৩৫ বছরের বেশি বয়সী প্রার্থীদের চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ না থাকায় ৩৫ বছরের বেশি বয়সসীমার নিয়োগপ্রত্যাশীদের আবেদন ও নিয়োগ সুপারিশ বিবেচনারও সুযোগ নেই।