শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে তিনি যে সুপারিশ করেছিলেন, সেটির আর কোনো কার্যকারিতা নেই। তাঁর সুপারিশপত্রটি নিয়ে একটি পক্ষ জল ঘোলা করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সুপারিশের কার্যকারিতা না থাকার কারণ হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, এ বিষয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী জাতীয় সংসদে উত্তর দিয়ে দিয়েছেন।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এ বিষয়ে তাঁর অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।
সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করে একটি আধা সরকারি পত্র দিয়েছিলেন। এরপর বিষয়টি জাতীয় সংসদেও বিষয়টি আলোচনা হয়।
জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য রফিকুল ইসলাম ও ফরিদা ইয়াসমিনের পৃথক দুটি সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছিলেন, ‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। আপাতত বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত সরকারের নেই। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আরও আলাপ-আলোচনা করা হবে। আরও আলোচনা-পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে বিষয়টি দেখা হবে।’
এ বিষয়ে সচিবালয়ে আজকের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী এ বিষয়ে অনুরোধ করেছিলেন, কিছু কিছু বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনাকালে মনে হয়েছে, সেটার বিষয়ে একটা সুপারিশ করা যেতে পারে। সেই হিসেবে আমি একটি সুপারিশপত্র দিয়েছি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে সেই সুপারিশপত্র পুঁজি করে অনেকেই জল ঘোলা করার চেষ্টা করছেন।’
মহিবুল হাসান চৌধুরী আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যে জনপ্রশাসনমন্ত্রী জাতীয় সংসদে এ বিষয়ে পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন যে রাষ্ট্রের নীতিগত সিদ্ধান্তটা কী। চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে এই মুহূর্তে যে সিদ্ধান্ত নেই, সেটা বলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একটি পক্ষ আমার সেই সুপারিশপত্র পুঁজি করে সংঘাতমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে, অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করতে চাইছে। সুতরাং আমি তাদের বলব, এটা অত্যন্ত একটা খারাপ কাজ তারা করছে। রাষ্ট্র উত্তর দিয়েছেন, এখানেই বিষয়টি সমাপ্তি ঘটেছে। আমার সুপারিশপত্রের কার্যকারিতা এখন নেই। যেহেতু জাতীয় সংসদে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলে দিয়েছেন। এখন এটাকে নিয়ে জলঘোলা করে নানা জায়গায় দাঁড়িয়ে আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা কখনোই কাম্য নয়।’
চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার দাবিতে গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। ‘চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫-প্রত্যাশী সমন্বয় পরিষদ’ নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে এ কর্মসূচি ডাকা হয়েছিল। এ কর্মসূচি থেকে ১৫ জনকে শাহবাগ থানার পুলিশ আটক করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।