দেশে চলমান রাজনৈতিক অবস্থা ও অবরোধের মধ্যে ৪৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবি তুলেছেন কিছু পরীক্ষার্থী। তবে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) বলছে, দেশে পরীক্ষা পেছানোর মতো অবস্থা তৈরি হয়নি। অনেকে পরীক্ষা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েও পিএসসিকে বার্তা পাঠিয়েছে। তাই পিএসসি এখনই পরীক্ষা পেছানোর কথা ভাবছে না।
পরীক্ষা পেছানোর বিষয়ে অবস্থান জানতে চাইলে পিএসসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে প্রথম আলো থেকে ৪৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা স্থগিতের জন্য পরীক্ষার্থীদের একটি খুদে বার্তা পাঠানো হয়। ওই কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে চাকরিপ্রার্থীদের পাল্টা একটি খুদে বার্তা পাঠান। সেখানে লেখা আছে, পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত, কোনোভাবেই যেন পরীক্ষা পেছানো না হয়। পরে পরীক্ষা পেছানোর প্রসঙ্গে ওই কর্মকর্তা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেমিস্টার পরীক্ষা নিচ্ছে, অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো চাকরির পরীক্ষা নিচ্ছে। ৪১তম বিসিএসের ভাইভা আমরা নিচ্ছি। সেটা ঢাকায় এসে দিতে হয়। সেখানে ৪৫তম বিসিএস ঢাকা ও বিভাগীয় শহরে হবে সেটি পেছানোর যুক্তি নেই। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে পরীক্ষা পেছানোর মতো এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আমরা পরীক্ষা হবে বলেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছি। পরীক্ষা নেওয়া হবে না বা পেছানো হবে, এমন সিদ্ধান্ত নেই আমাদের।’
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনন্দ কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘পিএসসির একটি কমিশন আছে। তারা যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে তা আমাদের জানায়। আমরা তা বাস্তবায়ন করি। এখন পর্যন্ত পরীক্ষা পেছানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের জানা নেই।’
এদিকে ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা ২৭ নভেম্বর শুরু হওয়ার সূচি প্রকাশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর চলমান বিরোধী দলগুলোর হরতাল-অবরোধের কারণে এ পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে আবেদন করেছেন ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার্থীরা।
গত রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে লিখিত পরীক্ষা স্থগিতের আবেদনপত্র জমা দেন পরীক্ষার্থীরা। আবেদনপত্রে ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার্থীদের স্বাক্ষরও রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এবং ‘পিএসসির সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে’ স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে পরীক্ষার আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার আবেদন জানিয়েছেন ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার্থীরা।
পিএসসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আবশ্যিক বিষয়ে লিখিত পরীক্ষা ২৭ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে একযোগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কারিগরি বা পেশাগত ক্যাডারের পদসংশ্লিষ্ট বিষয়ের লিখিত পরীক্ষা ৬ ডিসেম্বর শুরু হয়ে চলবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
৪৫তম বিসিএসের মাধ্যমে মোট ২ হাজার ৩০৯ জন ক্যাডার নেওয়া হবে। নন-ক্যাডারে নেওয়া হবে ১ হাজার ২২ জন।