সহকারী জজ নিয়োগ: গেজেট হয়নি ১০ মাসেও, হতাশায় প্রার্থীরা

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের (বিজেএসসি) অধীন সহকারী জজ নিয়োগের ষোড়শ বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের (বিজেএস) চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয় গত ২৪ সেপ্টেম্বর। এতে ১০৪ জন প্রার্থীকে সহকারী জজ পদে সাময়িকভাবে সুপারিশ করা হয়। চূড়ান্ত ফল প্রকাশের প্রায় ১০ মাস হলেও এখনো তাঁদের নিয়োগের গেজেট প্রকাশ করা হয়নি। তিন ধাপে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী জজ হিসেবে সুপারিশ পাওয়ার পর গেজেট না হওয়ার কারণে চাকরিতে যোগ দিতে পারছেন না তাঁরা।

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, ষোড়শ বিজেএসের মাধ্যমে সহকারী জজ নিয়োগের জন্য গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন গত বছরই প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা নেয়। গত ১৯ সেপ্টেম্বর মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার মাত্র পাঁচ দিন পরই ২৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়।

ষোড়শ বিজেএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ একজন চাকরিপ্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘৪০তম বিসিএসের নন–ক্যাডারের ফল ষোড়শ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার পরে হয়েছে। সেসব প্রার্থীর ভেরিফিকেশন এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করে ইতিমধ্যে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অথচ ১০ মাসেও আমাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না।’

সহকারী জজ হিসেবে সুপারিশ পাওয়া আরেক প্রার্থী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সুপারিশ পাওয়ার ১০ মাস পরও বেকার বসে আছি। একজন বেকারের জন্য দীর্ঘ ১০ মাস অবর্ণনীয় কষ্টের। দীর্ঘদিন ধরে গেজেট না হওয়ায় বন্ধু-স্বজনেরা ভাবছেন চাকরি হয়নি। লজ্জায় গ্রামে যেতে পারছি না। সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছি।’

সহকারী জজ নিয়োগের সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন। বিচার বিভাগ পৃথক হওয়ার পর ২০০৭ সালে এই কমিশন গঠিত হয়। বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন, নিম্ন আদালতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীরা বলছেন, নিম্ন আদালতে মামলাজট তৈরি হওয়ার অন্যতম কারণ নতুন বিচারক নিয়োগের দীর্ঘসূত্রতা। সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীরা দ্রুত চাকরিতে যোগ দিতে পারলে এ জট কমত।

বিজেএসসি সূত্রে জানা গেছে, তৃতীয় ও চতুর্থ বিজেএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের দুই থেকে চার মাসের মধ্যে যাচাই প্রতিবেদন শেষ হয়েছিল। তাই দুবার কম সময়ে নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ হয়েছিল। কিন্তু এর পর থেকে পুলিশি যাচাই প্রতিবেদন ও অন্যান্য প্রক্রিয়ায় সময় বেশি লাগছে, এ জন্য নিয়োগপ্রক্রিয়ার সময় বাড়ছে। ১২তম বিজেএসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের ১০ মাস পর গেজেট হয়, ১৩তম বিজেএসে ১১ মাস পর গেজেট হয়, ১৪ ও ১৫তম বিজেএসে ৯ মাস পর গেজেট প্রকাশিত হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইন ও বিচার বিভাগের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ ভেরিফিকেশনের ফাইল এখনো আমাদের কাছে আসেনি। ফাইল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আছে। ভেরিফিকেশন শেষে ফাইল আমাদের কাছে এলে দ্রুত কাজ শেষ করতে পারব।’