ইনডেক্সধারী শিক্ষকেরা শূন্য পদে বদলির দাবিতে লংমার্চ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন
ইনডেক্সধারী শিক্ষকেরা শূন্য পদে বদলির দাবিতে লংমার্চ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন

শূন্য পদে বদলি চেয়ে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের লংমার্চ

বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় কর্মরত ইনডেক্সধারী শিক্ষকেরা শূন্য পদে বদলির দাবিতে লংমার্চ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলি গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী ঐক্য পরিষদের আয়োজনে সারা দেশ থেকে আসা তিন শতাধিক শিক্ষক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন। সেখান থেকে লংমার্চ করে সচিবালয়ের সামনে যান তাঁরা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বেলা আড়াইটা) সেখানে অবস্থান করছেন।

ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলি গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রভাষক মো. সরোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার যে পারস্পরিক বদলি চালু করেছে, সেটি আমাদের কোনো কাজে লাগবে না। তাই আমরা শূন্য পদে বদলি চেয়ে লংমার্চ মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করছি। আজ ও কাল আমরা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান করব। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাব।’

শিক্ষকেরা বলেন, ২০১৬ সাল থেকে এনটিআরসিএ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সুপারিশ করে আসছে। প্রথম গণবিজ্ঞপ্তিতে উপজেলাভিত্তিক শিক্ষক সুপারিশ করার ফলে নিজ উপজেলায় শূন্য পদ না থাকায় অনেক শিক্ষক বাধ্য হয়ে মাদ্রাসায় ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে মেরিট পজিশন অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষক সুপারিশ করা হয়েছিল। এনটিআরসিএর নিয়োগ পরিপত্র অনুযায়ী, একজন ইনডেক্সধারী শিক্ষক যেকোনো বয়সে পরবর্তী যেকোনো গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের মাধ্যমে মেরিট পজিশন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতে পারবেন। তাই দ্বিতীয় ও তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে অনেক নিবন্ধনধারী শিক্ষক নিজ এলাকায় শূন্য পদ না থাকায় দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে আবেদন করে সুপারিশ পেয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ করে নিয়োগ কর্তৃপক্ষ পরিপত্র ২০১৫ এর ৭নং অনুচ্ছেদ সাময়িক স্থগিত করার কারণে চতুর্থ ও পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারীদেরও আবেদনের সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ইনডেক্সধারী শিক্ষকেরা এখন সমস্যায় পড়েছেন। বিশেষ করে নারী শিক্ষকদের পাশাপাশি পুরুষ শিক্ষকেরাও নিজ উপজেলা থেকে ৪০০-৫০০ কিলোমিটার দূরে এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ পেয়ে পরিবার ছেড়ে আরেক জায়গায় চাকরি করছেন।

‘ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলি গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী ঐক্য পরিষদ’–এর আয়োজনে লংমার্চ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকেরা

শিক্ষকেরা আরও বলেন, নিজের বাড়ি থেকে অনেক দূরে থাকায় মাত্র ১২ হাজার ৫০০ টাকা বেতনে বাসা ভাড়া দিতেই বেতনের অর্ধেক টাকা চলে যায়। ইতিমধ্যে শিক্ষকদের কষ্টের কথা কিছু উপলব্ধি করতে পেরে বিদায়ী সরকার পারস্পরিক বদলির প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এ প্রজ্ঞাপন দিয়ে ১ শতাংশ শিক্ষকও বদলি হতে পারবেন না এবং নিজ জেলায় সম পদ পাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে যাবে। এতে শিক্ষকবৈষম্য আরও প্রকট আকার ধারণ করবে। তাই সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্কুল ও কলেজ থেকে মাদ্রাসা ও কারিগরি এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি থেকে স্কুল ও কলেজে শূন্য পদের বিপরীতে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করে বদলির অনুমতি দেওয়া হোক।