৪০তম বিসিএস থেকে নন–ক্যাডারে ৩ হাজার ৬৫৭ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। পিএসসি বলছে, পদ খালি থাকার পরও দুই কারণে তাঁরা প্রার্থীদের নিয়োগের সুপারিশ করতে পারেননি। এ জন্য নন–ক্যাডারের কিছু পদ খালি রেখেই অন্যদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির নির্ভরযোগ্য সূত্র প্রথম আলোকে বলেন, ‘৪০তম বিসিএসে নন–ক্যাডারে অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের পছন্দের পদ বাছাই করতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। ওই সময়ের মধ্যে এখানে ৬ হাজার ২০০ প্রার্থী চাকরির জন্য পদ বাছাই করে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আমরা যখন আবেদন বিশ্লেষণ করি, তখন দেখা যায় কেউ একটি, কেউ দুটি বা কেউ তিনটি পদ পছন্দ করে আবেদন ফরম সাবমিট করেছিলেন। এর বেশি আবেদনের অপশন থাকলেও কিছু চাকরিপ্রার্থী তাতে আবেদন করেননি। যোগ্যতা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ওই একটি, দুটি বা তিনটি পদ বাছাই করা প্রার্থীদের যোগ্যতার সঙ্গে তাঁদের সেই বাছাই করা পদগুলোর সামঞ্জস্য হয়নি। তাই এ অবস্থায় অনেকে মেধায় এগিয়ে থাকলেও তাঁদের নিয়োগের সুপারিশ করা যায়নি। এটি একটি কারণ। আরেকটি কারণ হচ্ছে, কিছু পদের সঙ্গে আবেদনকারীদের যোগ্যতার সামঞ্জস্য হয়নি। ধরা যাক, কেউ কেউ কারিগরি কোনো পদে আবেদন করেছিলেন। সেটির সঙ্গে তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতার মিল নেই। তাঁরাও নিয়োগের সুপারিশ পাননি। এ দুই কারণে কিছু পদ বাদ রেখেই ৩ হাজার ৬৫৭টি পদে নিয়োগের সুপারিশ করতে হয়েছে পিএসসিকে। ৪০তম বিসিএসের নন-ক্যাডারে ৪ হাজার ২৭২টি পদের জন্য আবেদন চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রকাশিত ফলে সুপারিশ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬৫৭ জনকে। বাকি ৬১৫টি পদে সুপারিশ করা হয়নি।’
৪০তম বিসিএসের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, কিন্তু বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে সুপারিশ করা সম্ভব হয়নি—এমন প্রার্থীদের মধ্যে যাঁরা নন-ক্যাডার পদের চাকরিতে আগ্রহী, তাঁদের কাছ থেকে অনলাইনে আবেদন চায় পিএসসি। প্রথম দফায় আবেদন শেষ হওয়ার পর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী (পুর)/উপজেলা সহকারী প্রকৌশলীর ১৫৬টি পদে নিয়োগে জটিলতা দেখা দিলে তা বাদ রেখে আবার আবেদন চায় পিএসসি। সেটি শেষ হয় ৭ সেপ্টেম্বর। পিএসসির এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপারিশ করা সম্ভব হয়নি—এমন ৮ হাজার ১৬৬ প্রার্থীর মধ্যে যাঁরা ৯ম, ১০ম, ১১তম ও ১২তম গ্রেডের নন-ক্যাডার পদে চাকরি করতে চান, তাঁরা আবেদন করতে পারবেন। তবে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী (পুর)/উপজেলা সহকারী প্রকৌশলীর ১৫৬টি পদে পছন্দক্রম চায়নি পিএসসি।
পিএসসি জানায়, টেলিটক বা পিএসসির ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নন-ক্যাডার পদের জন্য নির্ধারিত ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে আবেদনপত্র জমা না দিলে নন-ক্যাডার পদের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে বিবেচনা করা হবে না। এর আগে গত ২ থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত নন-ক্যাডার পদের পছন্দক্রম চাওয়া হয়। কিন্তু এলজিইডির ১৫৬টি পদের জটিলতায় আবেদনপ্রক্রিয়া আটকে যায়।
পিএসসি সূত্রে জানা যায়, ৪০তম বিসিএসে ৪ হাজার ৪৭৮টি নন-ক্যাডার পদে নিয়োগপ্রক্রিয়া চলমান ছিল। এর মধ্যে ১৫৬টি পদে এলজিইডিতে নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল। তবে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ১৫৬টি পদ প্রত্যাহার চেয়ে পিএসসির কাছে আবেদন করে।
তখন এলজিইডিতে সুপারিশ পাওয়া ২২ জন এলজিইডির ১৫৬টি পদ প্রত্যাহার চেয়ে পিএসসির কাছে করা আবেদন চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন। ওই আবেদন স্থগিত করেন হাইকোর্ট। ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে আপিল করলে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। ফলে ৪০তম বিসিএসের নন-ক্যাডার পদের সবার নিয়োগপ্রক্রিয়া আটকে যায়। তাই ৪০তম বিসিএসের নন-ক্যাডারে অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের আবার পছন্দের পদে আবেদন করতে হয়। সেই আবেদনের ফল আজ প্রকাশ করা হলো।