ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতিসহ নানা দাবিতে আন্দোলন করছেন বেতারের কর্মকর্তারা
ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতিসহ নানা দাবিতে আন্দোলন করছেন বেতারের কর্মকর্তারা

বৈষম্য নিরসনে ৭ দফা দাবিতে বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মানববন্ধন

বাংলাদেশ বেতারের সর্বস্তরের কর্মকর্তা–কর্মচারী, নিজস্ব শিল্পী ও কলাকুশলীদের চাকরিতে পদোন্নতি ও বিভিন্ন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ বেতার, আগারগাঁও, ঢাকা কেন্দ্রের মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে বেতারের সর্বস্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী, নিজস্ব শিল্পী ও কলাকুশলীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনে তাঁরা বিভিন্ন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে বৈষম্য নিরসনে দাবিগুলো তুলে ধরেন। বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ স্বপ্নযাত্রায় গর্বিত অংশীদার হতে বেতাবের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের দাবিগুলো হলো—

দাবি তুলে কর্মকর্তারা বলেন, বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান বিভাগের ২৪ থেকে ২৭তম বিসিএসের কর্মকর্তারা ষষ্ঠ গ্রেডে, যাঁদের অধিকাংশ ১৪ বছরের অধিক এবং ২৮ থেকে ৩৭তম নবম গ্রেডের অধিকাংশ কর্মকর্তা ৮ থেকে ১৪ বছর ধরে পদোন্নতিবঞ্চিত। উল্লেখ্য, এসব ব্যাচের কর্মকর্তারা এখনো পর্যন্ত তাঁদের প্রথম প্রমোশনই পাননি ২৭ থেকে ২৪তম গ্রেডের কর্মকর্তারা। ক্ষেত্রবিশেষে ৯ থেকে ১৫ বছর একই গ্রেডে (ষষ্ঠ) রয়ে গেছেন, যেখানে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে ২৯ ব্যাচ ইতিমধ্যে ৫ম গ্রেডের পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। একই বিভাগের ৯ম, ১৩তম ও ১৫তম বিসিএসের কর্মকর্তারা এখনো চতুর্থ গ্রেডে আছেন।

মানববন্ধনে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি উন্নত ও বৈষম্যহীন ব্রডকাস্টিং সার্ভিস বিনির্মাণে বাংলাদেশ বেতারে কর্মকর্তারা নিজেদের বৈষম্যর কথা প্ল্যাকার্ডে তুলে ধরেন

১। বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বঞ্চনার অবসান করা।

২। ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতিসহ উপসচিব পদে ন্যায্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি নিশ্চিত করা।

৩। একীভূত বিসিএস (তথ্য) ক্যাডার বাস্তবায়ন কর।

৪। বাংলাদেশ বেতার থেকে নিজস্ব মহাপরিচালক নিয়োগ করা।

৫। নন-ক্যাডার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য প্রস্তাবিত নিয়োগবিধি বাতিলপূর্বক পুনসংশোধন করা।

৬। বাংলাদেশ বেতারের নিজস্ব শিল্পীদের পদ স্থায়ীকরণ ও পদোন্নতির ব্যবস্থা গ্রহণ।

৭। অনিয়মিত চুক্তিভিত্তিক শিল্পীদের চাকরি স্থায়ী করতে হবে।

বেতারের অনিয়মিত চুক্তিভিত্তিক শিল্পী সমতির সাধারণ সম্পাদক ওয়াকিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ বেতারে প্রায় ১ হাজার ৬০০ জন অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক শিল্পী রয়েছেন। অনিয়মিত চুক্তিভিত্তিক শিল্পীরা বেতারে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান ও সংবাদ পাঠের দায়িত্ব দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু আমাদের বেতন খুবই কম। এই বেতন দিয়ে ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকা কষ্টের। অনেকেই আট থেকে নয় হাজার টাকায় সারা মাস কাজ করে। আমাদের নিয়োগ হচ্ছে না এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ বেতারের ৯ম, ১৩তম ও ১৫তম বিসিএস কর্মকর্তারা এখনো চতুর্থ গ্রেডে আছেন। এ ছাড়া ২৪তম থেকে ২৭তম বিসিএসের কর্মকর্তারা ষষ্ঠ গ্রেডে রয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশ ১৪ বছরের অধিক এবং ২৮তম থেকে ৩৫তম বিসিএসের নবম গ্রেডের অধিকাংশ কর্মকর্তা প্রায় ৮–১৪ বছর ধরে পদোন্নতি বঞ্চিত রয়েছেন।

বিসিএস তথ্য ক্যাডারের চারটি সাব–ক্যাডার বয়েছে। উপসচিব পদে আবেদন প্রেরণের ক্ষেত্রে এ চার সাব–ক্যাডারের। মধ্যে একটি সাব ক্যাডার গণযোগাযোগ/পিআইডি থেকে ১৩৬টি ভিত্তি পদের বিপরীতে প্রতিবছর ১০টি আবেদন গ্রহণ করা হয়। অথচ নিদারুণ বৈষম্যের নজির স্থাপন করে বাংলাদেশ বেতারের বিসিএস তথ্য ক্যাডারের ১৩টি সাব–ক্যাডার থেকে ৩২৩টি ভিত্তি পদের বিপরীতে অযৌক্তিকভাবে মাত্র ১০টি আবেদন গ্রহণ করা হয়।