জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না। গত ৪ জুলাই প্রতিষ্ঠানটি প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও উপপরিচালক পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও উপপরিচালক পদে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হলেও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে যোগ্য আবেদনকারী না পাওয়ায় পরীক্ষা নিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।
প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে আবেদনের জন্য কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূতত্ত্ব, ভূপদার্থবিদ্যা, পেট্রোলিয়াম, মেকানিক্যাল, কেমিক্যাল, মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি চাওয়া হয়েছিল। অথবা ভূতত্ত্ব বা ভূপদার্থবিদ্যায় কমপক্ষে প্রথম শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতকোত্তর বা সমমানের ডিগ্রি অথবা দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রিসহ প্রথম শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতকোত্তর অথবা পেট্রোলিয়াম, মেকানিক্যাল, কেমিক্যাল, মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে কমপক্ষে প্রথম শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি থাকতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের যোগ্যতায় বলা হয়েছিল, শিক্ষাজীবনের কোনো স্তরে তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি অথবা সমমানের সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য হবে না। পেট্রোলিয়াম বা খনিজ অনুসন্ধান, উন্নয়ন, গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন এবং গবেষণার কাজে কমপক্ষে ১২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তবে পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ৩ বছর পর্যন্ত শিথিলযোগ্য। পেট্রোলিয়াম বা খনিজ অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও অন্যান্য বিষয়ে পরামর্শ প্রদানের সামর্থ্য থাকতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের জার্নালে কমপক্ষে দুটি স্ট্যান্ডার্ড টেকনিক্যাল অথবা বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশনা থাকতে হবে।
কিন্তু বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদের জন্য যেসব আবেদনপত্র পেয়েছে, তার মধ্যে কারও এসব যোগ্যতা নেই। তাই এ পদে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (এসও) মো. রনি রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, বিজ্ঞপ্তিতে যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো পূরণ করে কোনো প্রার্থীই আবেদন করেননি। যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় তাই পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না। প্রধান বৈজ্ঞানিক
কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য পত্রিকায় আবার বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে।
মো. রনি রায়হান আরও বলেন, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। পেট্রোলিয়াম বা খনিজ অনুসন্ধান ও গবেষণার সঙ্গে যুক্ত থাকেন। খনিজ সম্পদের উন্নয়ন, গবেষণা ও অন্যান্য বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে কোনো যোগ্য প্রার্থী খুঁজে না পাওয়ার কারণের বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ কৌশল বিভাগের শিক্ষক মো. সৌমিক রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দেশে গবেষণা করার সুযোগ কম। গবেষণা করার
জন্য যেসব সহায়তা দরকার, সেসব পাওয়া যায় না। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার পরিবেশ কম।’
মো. সৌমিক রহমান আরও বলেন, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদটি উচ্চপর্যায়ের। এ পদের জন্য যাঁরা আবেদনের যোগ্য, তাঁদের অনেকে হয়তো বিদেশে ভালো বেতনে চাকরি করছেন। তাঁদের দেশে আনতে হলে গবেষণার উপযুক্ত পরিবেশ ও ভালো সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।