যুক্তরাষ্ট্রে চাকরির বাজার দুই বছরে সর্বনিম্ন

গত অক্টোবরে প্রতি একজন বেকার ব্যক্তির জন্য ১ দশমিক ৩৪টি শূন্য পদ ছিল
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রে চাকরির সুযোগ গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে। উচ্চ সুদহার শ্রমিকদের চাহিদা কমিয়ে দিচ্ছে এবং ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতি কঠোরকরণ চক্র শেষ হওয়ায় আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা বেড়েছে।

গত মঙ্গলবার মার্কিন শ্রম বিভাগের জব ওপেনিংস অ্যান্ড লেবার টার্নওভার সার্ভে বা জল্টসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অক্টোবরে প্রতি একজন বেকার ব্যক্তির জন্য ১ দশমিক ৩৪টি শূন্য পদ ছিল, যা ২০২১ সালের আগস্ট থেকে সর্বনিম্ন এবং সেপ্টেম্বরে ১ দশমিক ৪৭–এর থেকে কম। আগের চেয়ে অনেক কম কর্মী চাকরি থেকে পদত্যাগ করছেন, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মজুরি মূল্যস্ফীতি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

নিউইয়র্কে হাই ফ্রিকোয়েন্সি ইকোনমিকস ইন হোয়াইট প্লেইনসের প্রধান অর্থনীতিবিদ রুবিলা ফারুকি বলেছেন, ‘এই তথ্যগুলো নীতিনির্ধারকদের জন্য একটি ভালো খবর হবে।’

শ্রম বিভাগের শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হওয়া শ্রম চাহিদার একটি পরিমাপ। যা অক্টোবরের শেষ দিনে ৬ লাখ ১৭ হাজার থেকে ৮৭ দশমিক ৩৩  লাখে নেমে এসেছে। যা ২০২১ সালের মার্চ থেকে সর্বনিম্ন স্তর এবং সেপ্টেম্বরে ৯৩ লাখের বেশি নেমে এসেছে।

রয়টার্স পরিচালিত এক জরিপে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, অক্টোবরে ৯৩ লাখ চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হবে। মে মাস থেকে শূন্য পদে সবচেয়ে বড় মাসিক পতনের অগ্রভাগে ছিল স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক সহায়তা খাত, যেখানে নতুন চাকরি ২ লাখ ৩৬ হাজার কমেছে।

ফিন্যান্স ও ইনস্যুরেন্স ইন্ডাস্ট্রিতেও নতুন চাকরির সুযোগ ১ লাখ ৬৮ হাজার কমেছে। এখানে রিয়েল এস্টেট, ভাড়া ও লিজিংয়ে ৪৯ হাজারের কম পদ রয়েছে। তবে তথ্য খাতে চাকরির সুযোগ বেড়েছে ৩৯ হাজার। গত সেপ্টেম্বরে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি ৫ দশমিক ৬ থেকে ৫ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে কর্মী নিয়োগও কমে এসেছে। আবাসন ও খাদ্য পরিষেবাশিল্পে নিয়োগ কমেছে ১ লাখ ১০ হাজার, যা মহামারি থেকে পুনরুদ্ধারের পর থেকে চাকরি বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় চালক ছিল। নিয়োগের হার আগের মাসে ৩ দশমিক ৮ থেকে কমে ৩ দশমিক ৭ হয়েছে।

দেশটিতে পদত্যাগ করা কর্মীর সংখ্যাও নেমে এসেছে। চাকরি ছাড়ার হারকে শ্রমবাজারের আস্থার পরিমাপ হিসেবে দেখা হয়। বছরের চতুর্থ মাসে এই হার অপরিবর্তিত ছিল। পদত্যাগের হার কমে আসা মজুরি বৃদ্ধির মন্থরতা ও অর্থনীতিতে মূল্যের চাপকে নির্দেশ করে।

ইনডিড হায়ারিং ল্যাবের ইকোনমিক রিসার্চের পরিচালক নিক বাঙ্কার বলেন, ‘শ্রমবাজারের বর্তমান অবস্থা নির্দেশ করে, শ্রমবাজারে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে আর কোনো পুনর্নির্মাণের প্রয়োজন নেই।’