সপ্তাহে চার দিন অফিস বা কাজের নিয়ম করায় স্পেনের কর্মীদের স্বাস্থ্যগত উন্নতি হয়েছে। এতে কর্মীদের ওপর চাপ কমছে। এ ছাড়া জ্বালানি নির্গমন হ্রাস হচ্ছে এবং শিশুদের অনেক উপকার হচ্ছে। গত মঙ্গলবার একটি পাইলট প্রোগ্রামের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
উপকূলীয় শহর ভ্যালেনসিয়া দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম শহর। এই শহরে আট লাখের বেশি মানুষের বাস। এই শহরে চলতি বছরের ১০ এপ্রিল থেকে ৭ মে–এর মধ্যে পরপর চারটি সোমবার স্থানীয় ছুটির দিন নির্ধারণ করা হয়। প্রকল্পটি ৩ লাখ ৬০ হাজার কর্মীকে প্রভাবিত করেছে।
স্বাস্থ্য ও সামাজিক বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞদের একটি স্বাধীন কমিশন এই প্রকল্প মূল্যায়ন করেছে। ওই মূল্যায়নে বলা হয়েছে, প্রকল্পে অংশ নেওয়া অনেক কর্মীই এই দীর্ঘ সপ্তাহান্তে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। এর মধ্যে খেলাধুলা, বিশ্রাম ও বাড়িতে তৈরি খাবার খাওয়ার অভ্যাস তাঁরা করেছেন।
প্রকল্পের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্পে অংশ নেওয়া কর্মীদের স্বাস্থ্যগত উন্নতি, চাপ ও ক্লান্তি কমে আসা এবং আনন্দিত ও ব্যক্তিগত সন্তুষ্টি–সম্পর্কিত আরও ভালো অনুভূতির তথ্য জানা গেছে।
শহরের দৈনিক নির্গমন পরিমাপ অনুসারে, যানবাহনের ব্যবহার হ্রাসের কারণে প্রোগ্রামটি চলাকালে চার সোমবার বায়ুর গুণমান উন্নত হয়েছিল। কারণ, এ সময় কম নাইট্রোজেন ডাই–অক্সাইড নির্গত হয়েছিল। তবে এ সময় ধূমপায়ী ও মদ্যপানকারী ব্যক্তিরা সামগ্রিকভাবে তাঁদের তামাক ও অ্যালকোহল গ্রহণের মাত্রা বাড়িয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের স্বাধীন কমিশন বলেছে, প্রকল্পে অংশ নেওয়া কর্মীদের একটি বড় অংশ সপ্তাহে তিন দিনের ছুটিতে বই পড়া, গবেষণা, সিনেমা দেখা ও ফটোগ্রাফি, সংগীত বা চিত্রকলার মতো কাজগুলো বেশি করেছেন, তবে এই কর্মীর সংখ্যা কত শতাংশ, তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। এই প্রকল্পের কারণে শিশুরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছে। কারণ, তাদের মা-বাবার উন্নত কর্মজীবনের ভারসাম্যের জন্য তারা আরও ভালো সময় কাটাতে পেরেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্ধিত সপ্তাহান্তে আতিথেয়তা ও পর্যটন খাতগুলো আরও বেশি গ্রাহকদের সেবা দিয়েছে। তবে খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, তাঁদের বিক্রি কমে গেছে।
প্রকল্পটি প্রগ্রেসিভ, গ্রিন ও রিজিওনালিস্ট দলগুলোর বামপন্থী সমঝোতা জোটের পরিকল্পনায় করা হয়েছিল। গত বছর স্পেন সরকার দেশব্যাপী ছোট ও মাঝারি আকারের শিল্পপ্রতিষ্ঠানে একই ধরনের দুই বছর মেয়াদি প্রকল্প চালু করেছে।