প্রাথমিকে প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীদের কোটায় নিয়োগের দাবি

জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত পর্বে বাদ পড়া প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীরা।
ছবি: সংগৃহীত

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে প্রতিবন্ধী কোটায় নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চূড়ান্ত ফলাফলে বাদ পড়া প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীরা।

আজ মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত পর্বে বাদ পড়া প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীরা। প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত তালিকায় বাদ পড়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলমান নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যুক্ত করার জন্য জোর দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীরা বলেন, প্রতিবন্ধিতার সঙ্গে সংগ্রাম করে দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেও বিশেষ কোটা সুবিধা না পেয়ে ক্রমাগতভাবে প্রতিবন্ধী মানুষেরা যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরিবঞ্চিত হতে থাকলে আগামী প্রজন্ম হতাশাগ্রস্ত হয়ে শিক্ষাবিমুখ হবে। এতে দেশে প্রতিবন্ধী ভিক্ষুকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ চূড়ান্ত পর্বে বাদ পড়া চাকরিপ্রার্থী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মো. সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, ‘সংবিধানে অনগ্রসর জনগোষ্ঠী বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে এবং প্রতিবন্ধী মানুষেরা অনগ্রসর জনগোষ্ঠীতে পড়ে কি না, আমরা জানতে চাই রাষ্ট্রের কাছে। বিশেষ ব্যবস্থা বা কোটা পদ্ধতি পাওয়ার যোগ্যতা আসলে কাদের? যদি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা প্রকৃত কোটার দাবিদার হয়ে থাকেন, তাহলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগে অন্যান্য কোটা থাকা সত্ত্বেও প্রতিবন্ধী কোটা কেন সংরক্ষণ করা হলো না?’

আমি একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নারী হয়েও এই নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফলে চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। যেখানে নারী কোটা ৬০ শতাংশ ছিল। আমি প্রতিবন্ধী কোটাও পেলাম না, নারী কোটাও পেলাম না।
পারুল বেগম, চাকরিবঞ্চিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী

চাকরিবঞ্চিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পারুল বেগম বলেন, ‘আমি একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নারী হয়েও এই নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফলে চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। যেখানে নারী কোটা ৬০ শতাংশ ছিল। আমি প্রতিবন্ধী কোটাও পেলাম না, নারী কোটাও পেলাম না।’

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সব চাকরিতে কোটা বহালের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসা গ্র্যাজুয়েট পরিষদের আহ্বায়ক আলী হোসাইন বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই বড় নিয়োগে স্বল্পসংখ্যক প্রতিবন্ধী মানুষ চাকরি না পাওয়ায় প্রতিবন্ধী সমাজ অত্যন্ত ব্যথিত। কারণ, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৮–এর দফা (৪)–এ বলা হয়েছে—নারী বা শিশুদের অনুকূলে কিংবা নাগরিকদের যেকোনো অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান প্রণয়ন হতে এ অনুচ্ছেদের কোনো কিছুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করবে না। অপর দিকে অনুচ্ছেদ ২৯–এর দফা (৩)(ক)–এ বলা হয়েছে—এ অনুচ্ছেদের কোনো কিছুই নাগরিকদের যেকোনো অনগ্রসর অংশ যাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারে, সে উদ্দেশ্যে তাঁদের অনুকূলে বিশেষ বিধান প্রণয়ন করা হতে রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করবেন।