চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব নিয়ে সেমিনার

প্রতীকী ছবি। প্রথম আলো
প্রতীকী ছবি। প্রথম আলো

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) সাম্প্রতিক উত্থান এবং চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে একটি ভার্চ্যুয়াল সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) আইওটি ক্লাবের উদ্যোগে গতকাল রোববার এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

সেমিনারে সূচনা বক্তব্য দেন রুয়েটের অধ্যাপক ড. মাসুদ রানা। আলোচক হিসেবে যুক্ত ছিলেন যুক্তরাজ্যে কর্মরত তিনজন বাংলাদেশি প্রকৌশলী। তাঁরা হলেন যুক্তরাজ্যের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান এয়ারনাউ পিএলসির ডেটা ইঞ্জিনিয়ার রূপম রাজ্জাক, ক্লাউড ইঞ্জিনিয়ার আরিফ হোসেন ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ফাইজুর রহমান।

চ্যাটজিপিটির সাম্প্রতিক ভার্সন নতুন কী কী কাজ করতে পারে, সেগুলো উঠে আসে সেমিনারে। এ প্রযুক্তির কারণে কোন কোন খাতে চাকরি কমবে এবং কোন কোন খাতে চাকরি বাড়বে, সেসব তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে মানুষ কীভাবে প্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে থাকতে পারে এবং শিক্ষার্থীরা চাকরির বাজারে প্রবেশর প্রস্তুতি নিতে পারেন, সেসব বিষয়ও উঠে আসে।

যুক্তরাজ্যের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান এয়ারনাউ পিএলসির ডেটা ইঞ্জিনিয়ার রূপম রাজ্জাক বলেন, চাকরির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটির প্রভাব ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। দাপ্তরিক, প্রশাসনিক ও ব্যবস্থাপনা-সম্পর্কিত কাজের ক্ষেত্রগুলোয় এটির প্রভাব দেখা যাচ্ছে। কনটেন্ট রাইটিং ও এন্ট্রি লেভেল প্রোগ্রামিংয়ে ক্ষেত্রে প্রভাব সবচেয়ে বেশি। কারণ, একজন জুনিয়র প্রোগ্রামার যেসব কোড তৈরি করেন, সেসব কোড এখন চ্যাটজিপিটি করে দিচ্ছে। ফলে, বড় বড় আইটি কোম্পানিতে জুনিয়র প্রোগ্রামারের আর ব্যাপকভাবে দরকার পড়ছে না। প্রোগ্রামিংয়ের চাকরি পেতে হলে এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি জানতে হবে এবং শক্ত প্রস্তুতি নিতে হবে।

যুক্তরাজ্যে কর্মরত ক্লাউড ইঞ্জিনিয়ার আরিফ হোসেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কম্পিউটিং অবকাঠামো প্রস্তুতি ও ব্যবহারের ধারণা দেন। তিনি বলেন, ব্যক্তিপর্যায়ে বড় প্রতিষ্ঠানের মতো করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মডেল প্রস্তুত করা সম্ভব না হলেও প্রুফ অব কনসেপ্ট বা ডেমো বানানো সম্ভব।

লন্ডনে কর্মরত সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ফাইজুর রহমান বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে যেসব পেশার মানুষ চাকরি হারাবেন, তাঁরা আর ওই পেশায় তেমন চাকরি পাবেন না। এ কারণে কিছু মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ ছাড়া উন্নত রাষ্ট্রগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন চিপ তৈরি করে লাভবান হবে। তারা অর্থনৈতিকভাবে আরও শক্তিশালী হবে।

অনুষ্ঠানে রুয়েটের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়। চ্যাটজিপিটির যুগে শিক্ষার্থীরা কীভাবে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেবেন, সে বিষয়েও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।