বিসিএস ভাইভার অভিজ্ঞতা-২, সিভিল সার্ভিসে আসতে চান কেন

৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত মো. নিয়ামত আলী খান
 ছবি: সংগৃহীত

৪৩তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৯ হাজার ৮৪১ প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেবেন। প্রতিদিন ১৮০ জনের ভাইভা নেবে পিএসসি। প্রার্থীদের প্রস্তুতির সুবিধার জন্য আগে যাঁরা মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে সফল হয়েছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতা প্রথম আলোয় প্রকাশ করা হচ্ছে। নিয়মিত আয়োজনের আজ দ্বিতীয় পর্বে মৌখিক পরীক্ষার অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন ৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত মো. নিয়ামত আলী খান।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পাস করে তিনটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মো. নিয়ামত আলী খান। চাকরির পাশাপাশি ৪১তম বিসিএসের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এ বিসিএসে তাঁর পছন্দের তালিকায় দ্বিতীয় নম্বরে ছিল প্রশাসন ক্যাডার।

গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ৪১তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা দেন মো. নিয়ামত আলী খান। ভাইভায় তাঁর ক্রমিক ছিল প্রথম দিকে। মো. নিয়ামত আলী খান বলেন, ‘স্যারের রুমের সামনে চেয়ারে প্রথম পাঁচজন বসেছিলাম। প্রত্যেক ভাইভা প্রার্থী শুকনা মুখে বের হয়ে আসছিলেন, তাঁদের দেখে একটু নার্ভাস লাগছিল। আশপাশে একটু কথা বলে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করেছিলাম।’

মো. নিয়ামত আলী খানের ১৪ থেকে ১৫ মিনিটের মতো মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। ভাইভায় তাঁকে প্রায় ১৭টি প্রশ্ন করা হয়েছিল। এর মধ্যে দুটি বাদে সবগুলোর উত্তর দিতে পেরেছিলেন তিনি।

৪১তম বিসিএসে মো. নিয়ামত আলী খানের প্রথম পছন্দ ছিল পররাষ্ট্র ক্যাডার এবং দ্বিতীয় প্রশাসন ক্যাডার। যেহেতু তাঁর প্রথম পছন্দ ছিল পররাষ্ট্র, তাই এ বিষয়ে বেশি প্রশ্ন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠিত বিষয় নিয়ে তেমন প্রশ্ন করা হয়নি তাঁকে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল নিয়ামত আলী খানকে। এ ছাড়া একজন কূটনীতিকের কী কী যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, একজন কূটনীতিকের ধৈর্য, পেশাদারত্ব, মনোযোগ ও সততা থাকা প্রয়োজন।

মো. নিয়ামত আলী খান যখন মৌখিক পরীক্ষা দেন, তখন অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। যেহেতু সেখানে ভালো অবস্থানে আছেন, সে চাকরি ছেড়ে কেন সিভিল সার্ভিসে আসতে চান, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। এর উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘দেশের মানুষের সেবা করতে চাই।’ এ ছাড়া সিভিল সার্ভিসে আসতে চাওয়ার পেছনে সামাজিক মর্যাদা আর চাকরির নিরাপত্তার বিষয়টিও বলেছিলেন।

‘যতদিন রবে পদ্মা যমুনা...’ এরপরের অংশ জানতে চাওয়া হয়েছিল নিয়ামত আলীর কাছে। তিনি বলেছিলেন ‘গৌরি মেঘনা বহমান, ততদিন রবে...শেখ মুজিবুর রহমান!’ মাঝের দুই শব্দ মনে ছিল না। এ কবিতার লেখকের নামও জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু লেখক কবি অন্নদাশঙ্কর রায় নাকি গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন। তাই সরি বলেছিলেন, মনে পড়ছে না।

রোহিঙ্গা ইস্যু সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল এবং রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে একজন কূটনীতিক হিসেবে কীভাবে আলোচনা চালিয়ে যাবেন, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। মো. নিয়ামত আলী খান বলেছিলেন, ‘স্টেকহোল্ডারদের ম্যানেজ করতে হবে। ধরুন, এটি একটি দ্বিপক্ষীয় আলোচনা, যেখানে দুটি পক্ষ রয়েছে। উভয় পক্ষকে দেখাতে হবে যে বিষয়টি সমাধান হলে দুই পক্ষেরই লাভ।’

  • আগামীকাল পড়ুন: ৪১তম বিসিএসে সুপারিশ পাওয়া একজনের ভাইভার অভিজ্ঞতা