বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)

দোষী পরীক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে পিএসসি

বিসিএস পরীক্ষার খাতা সময়মতো না দেখা ও জমা না দেওয়া, একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করা, নির্দেশনা না মেনে খাতা দেখাসহ নানা ভুলভ্রান্তি করেছেন—এমন কিছু পরীক্ষকের তালিকা করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। তাঁদের নাম ধরে ধরে ব্যবস্থা নেওয়াও শুরু করেছে সাংবিধানিক এ সংস্থা। পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

পিএসসি সূত্র জানায়, ৪১তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখা বিলম্ব হলে এর কারণ বের করতে তদন্ত কমিটি করে পিএসসি। সেখানে ৩১৮ পরীক্ষকের নাম বের করে পিএসসির তদন্ত দল। সেই দল ওই পরীক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে। এরপর পিএসসি প্রতি বিসিএসের খাতা দেখতে দেরি হওয়াসহ নানা ভুলভ্রান্তি করা পরীক্ষকদের তালিকা করার ও তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছে পিএসসি।

জানতে চাইলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই সব পরীক্ষককে বাদ দেওয়া হচ্ছে। ৪১তম বিসিএস থেকে তালিকা করা হচ্ছে। একইভাবে ৪৩তম ও ৪৪তম বিসিএসেও ওই তালিকা করা হয়েছে, যা আমাদের হাতে আছে। আমরা দোষী পরীক্ষকদের আর খাতা দিচ্ছি না বা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগও করছি না। তাঁদের পরিবর্তে যাঁরা খাতা ভালো দেখছেন আর ভুল করছেন না, তাঁদের বেশি খাতা দেখার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকবে।’

পিএসসি সূত্র জানায়, পরীক্ষকদের ভুল কমাতে পিএসসি ৪১তম বিসিএসের পর থেকে খাতা দেওয়ার আগে পরীক্ষকদের সতর্ক হওয়ার জন্য একাধিক সেমিনারের আয়োজন করে। তাতে বিভিন্ন সময় পরীক্ষকেরা কী কী ভুল করেছেন, তা দেখানো হয়। এসব ভুল যাতে আর না হয়, সে জন্য পরীক্ষকদের সতর্ক থাকার অনুরোধ করে পিএসসি। পিএসসি জানায়, এতে কাজ হচ্ছে। যেমন ৪১তম বিসিএসে প্রায় ১৫ হাজার খাতা প্রথম ও দ্বিতীয় পরীক্ষক দেখার পরে তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে গিয়েছিল। যেগুলোয় প্রথম ও দ্বিতীয় পরীক্ষকের দেওয়া নম্বরে ২০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বরের পার্থক্য ছিল। ৪৩তম বিসিএসে এটি হয়েছে ১০ হাজার। সর্বশেষ ৪৪তম বিসিএসে ৯ হাজারের বেশি কিছু খাতা তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে গেছে। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, সেমিনারের ফলে ও ব্যবস্থা নেওয়ায় পরীক্ষকদের ভুল কমে এসেছে।

জানতে চাইলে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনন্দ কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘তালিকা আমাদের হাতে, আমরা দেখে দেখে সমস্যা তৈরি করা পরীক্ষকদের বাদ দিচ্ছি। তাঁদের সঙ্গে আর পিএসসি যোগাযোগ করছে না। অন্যদিকে যাঁরা ভালো করছেন, সেই পরীক্ষকদের আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি এবং কাজ বেশি করে দিচ্ছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কতজন পরীক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা বলতে চাই না। তবে আমরা আমাদের কাজ অব্যাহত রাখব। পরীক্ষার খাতায় ভুল কমাতে আরও কিছু উদ্যোগ দেওয়া হচ্ছে। শিগগির সেগুলো চালু করা হবে।’