জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদের ফলের দাবিতে আন্দোলন করেছেন ফলপ্রত্যাশীরা
জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদের ফলের দাবিতে আন্দোলন করেছেন ফলপ্রত্যাশীরা

আন্দোলনকারীদের বক্তব্য শুনল পিএসসি, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর ফলের আশ্বাস দ্রুত

জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদের ফলের দাবিতে আন্দোলন করছেন ফলপ্রত্যাশীরা। সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) আন্দোলনকারীদের বক্তব্য শুনেছে এবং সে অনুসারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। পিএসসি ও আন্দোলনকারীদের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর ফলপ্রত্যাশীদের সমন্বয়ক মো. ইমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা রাতেও অবস্থান কর্মসূচির অংশ হিসেবে পিএসসির সামনে ছিলাম। সকালে আবার কর্মসূচি চালু ছিল। এ সময় পিএসসির চেয়ারম্যান স্যার আমাদের দুজন সমন্বয়ককে ডেকেছিলেন। আমাদের ফল দ্রুত দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়া চেয়ারম্যান বলেছেন, কোটা নিয়ে জনপ্রশাসন থেকে অফিশিয়াল অর্ডার পেলেই দ্রুত ফল প্রকাশের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা পিএসসিকে তিন কার্যদিবসের সময় দিয়ে আপাতত আমাদের কর্মসূচি স্থগিত করছি। প্রত্যাশা অনুসারে কাজ না হলে আবার কর্মসূচি শুরু করব।’

গতকাল রোববার থেকেই সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসির) সামনে অবস্থান নিয়েছেন জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর ফলপ্রত্যাশীরা। তাঁরা জানান, তাঁদের দাবি মানা না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা পিএসসির সামনে থেকে যাবেন না। ফলপ্রত্যাশীদের দাবি, বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, মনোটেকনিক ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজগুলোর শিক্ষকসংকট নিরসনে ‘জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক)’ পদের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে হবে। এ দাবিতেই তাঁদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি। মানববন্ধনে বলা হয়, তাঁদের এক দফা দাবি, অবিলম্বে ফল প্রকাশিত না হলে বিপিএসসির সামনে তাঁরা অনশনে বসার ও আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।

জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর ফলপ্রত্যাশীদের সমন্বয়ক মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘মৌখিক পরীক্ষায় মোট ৭ হাজার ৪০০ প্রার্থী ৩ হাজার ৮৭ পদের বিপরীতে অংশ নেন। মৌখিক পরীক্ষা চলাকালে পলিটেকনিক ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৩ ও ১৫তম গ্রেডভুক্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর আদালতে একটি অবৈধ রিট পিটিশন করেন, যেখানে তাঁরা নিয়মবহির্ভূতভাবে ১০ম গ্রেড জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে পদোন্নতি দাবি করেন, যা ২০২০ সালের প্রজ্ঞাপনের ক্যাডার, নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মহামান্য হাইকোর্ট মামলায় রুল ইস্যু না করে বাদীদের করা আবেদন (অ্যানেক্স-আই) ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আদেশ প্রদান করেন। তৎপ্রেক্ষিতে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্যাডারবহির্ভূত গেজেটেড ও নন-গেজেটেড (কর্মকর্তা-কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা ২০২০ মোতাবেক ১৩ ও ১৫তম গ্রেডভুক্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর (সপ/টিআর) পদ থেকে ১০ম গ্রেডভুক্ত জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক/নন-টেক) পদে পদোন্নতির সুযোগ নেই, মর্মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আবেদনটি নিষ্পত্তি করেন।

তা সত্ত্বেও ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে পুনরায় রিট পিটিশন করলে মহামান্য হাইকোর্ট নিয়োগপ্রক্রিয়ার ওপর ছয় মাসের স্থগিত আদেশ প্রদান করেন। ফলে শিক্ষক নিয়োগের সব ধাপ সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও অবৈধ মামলার কারণে চূড়ান্ত ফল প্রকাশে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছিল। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় রিটের বিপক্ষে আপিল করলে মহামান্য আদালত শুনানির দিন ধার্য করেন এবং স্থগিতাদেশের ওপর আট সপ্তাহের জন্য অর্ডারটি স্থগিত করেন। যার ফলে বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের মাধ্যমে চূড়ান্ত ফল প্রকাশে আইনি আর কোনো বাধা থাকে না। ভ্যাকেট সময়ের চার সপ্তাহ অতিবাহিত হয়ে গেলেও ফল দীর্ঘায়িত করার বিরুদ্ধে এবং অবিলম্বে ফল প্রকাশের দাবিতে ‘জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক) পদের ফলপ্রত্যাশী’রা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন এবং অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসি কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে বলেন, আজ সোমবার পিএসসিতে একটি সভা হয়েছে। এটি অফিশিয়াল কোনো সভা নয়। নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে চেয়ারম্যান কমিশনের সদস্যদের নিয়ে বসেছিলেন। কোনো বড় সিদ্ধান্ত হয়নি। পিএসসি থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা আশ্বস্ত হয়ে ফিরে গেছেন।