করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আরও দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে কোনো নন–ক্যাডার তালিকা থেকে নয়, সম্পূর্ণ নতুন বিসিএসে এই নিয়োগ দিতে চায় সরকার। এ জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে চাহিদাপত্র এসেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি)। আজ সোমবার বিশেষ সভায় নিয়োগবিধি ঠিক করেছে পিএসসি। এই বিধি তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠাচ্ছে।
পিএসসির একাধিক সূত্র বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে।
জানতে চাইলে পিএসসির ওই সূত্র প্রথম আলোকে বলে, ‘আমরা চেয়েছিলাম ৩৮ ও ৩৯তম বিসিএসের নন–ক্যাডার তালিকা থেকে মেধার ভিত্তিতে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগ পান। কেননা তাঁরা পরীক্ষিত। সবকিছুতে পাস করেছেন। পদ না থাকায় নিয়োগ দেওয়া যায়নি। কিন্তু মন্ত্রণালয় তাঁদের নিয়োগ দিতে চায় না। নতুন বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার চাহিদাপত্র এসেছে আমাদের কাছে। আজ নিয়োগবিধি ঠিক করা হয়েছে। এটি এখন জনপ্রশাসনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’
এদিকে ৩৮ ও ৩৯তম বিসিএসের প্রার্থীরা বলছেন, তাঁদের মধ্য থেকেই নিয়োগ দেওয়া হোক নতুন চিকিৎসকদের। ২০১৮ সালের এপ্রিলে ৩৯তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। আর ২০১৯ সালের এপ্রিলে তার ফল প্রকাশ করা হয়। ৩৯তম ব্যাচে উত্তীর্ণদের ভেতর থেকে ৪ হাজার ৭৯২ জন চিকিৎসককে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। ওই বছরেরই নভেম্বর মাসে ৪ হাজার ৪৪৩ জনকে স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। একই বিসিএসে উত্তীর্ণ ৮ হাজার ৩৬০ জনকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য রাখা হয়। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে সেই ৮ হাজার ৩৬০ জনের মধ্য থেকেই গত মে মাসে ২ হাজার জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নন-ক্যাডারের তালিকায় আরও ৬ হাজার ৩৬০ জন চিকিৎসক আছেন অপেক্ষায়।
প্রার্থীরা বলেন, একটি বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করতে বছরের পর বছর লেগে যায়। টেকনিক্যাল ক্যাডারের বিশেষ বিসিএস বিবেচনায় নিয়েও সে সময় খুব একটা কম নয়। ৩৯তম বিশেষ বিসিএস অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই বিসিএসে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকেই মে মাসে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেয় সরকার। আরও প্রায় সাড়ে ছয় হাজার চিকিৎসক কিন্তু ওই বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি পাননি। এই অবস্থায় নতুন বিসিএসে চিকিৎসক নিয়োগ যৌক্তিক নয়।
গত মাসে ৩৮তম বিসিএসের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এই বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে নন-ক্যাডার হিসেবে নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা চিকিৎসকরাও নিয়োগ পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন। কয়েকজন প্রার্থী বলেন, ৩৯তম বিসিএসের তুলনায় ৩৮তম বিসিএসের প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষাসহ দীর্ঘ যাচাইয়ের মধ্য দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়েছে। এখন তাঁরা জ্যেষ্ঠ। তাই নতুন দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগে তাঁদের অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।