২০২২ সালেও চীনের বড় অংশজুড়ে লকডাউনসহ নানা ধরনের বিধিনিষেধ ছিল। এতে ব্যাহত হয়েছে দেশটির অর্থনৈতিক কার্যক্রম, যার ছাপ পড়েছে ভোক্তাদের আচরণে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত বছর চীনের বাজারে স্মার্টফোন বিক্রয় বার্ষিক হিসাবে প্রায় ১৩ শতাংশ কমে গেছে।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইডিসিকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে চীনের বাজারে মোট ২৮ কোটি ৬০ লাখ স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে, আগের বছরে যা ছিল ৩২ কোটি ৯০ লাখ।
২০১৩ সালের পর চীনে গত বছরই সবচেয়ে কম স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে। গত বছর এই প্রথম তা বার্ষিক ৩০ কোটির নিচে নেমে এসেছে।
শুধু চীনে নয়, ২০২২ সালে সামগ্রিকভাবেই স্মার্টফোন বিক্রি অনেকটা কমেছে। গত বছর বৈশ্বিক স্মার্টফোন বিক্রির পরিমাণ ছিল ১২০ কোটি, যা আগের বছরের চেয়ে ১১ শতাংশ কম। এই পরিসংখ্যান ২০১৩ সালের পর সর্বনিম্ন।
২০২২ সালে চীনে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে ভিভোর স্মার্টফোন। তা সত্ত্বেও গত বছর তাদের বিক্রি কমেছে আগের বছরের চেয়ে ২৫ দশমিক ১ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে অনার নামের এক স্মার্টফোন। তাদের বিক্রি বেড়েছে ৩৪ শতাংশের বেশি, যদিও আগের বছর তাদের বিক্রির পরিমাণ ছিল খুবই কম। অর্থাৎ দুর্বল ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে গত বছর ভালো করেছে এই কোম্পানি।
চীনের বাজারে তৃতীয় স্থানে আছে অ্যাপলের আইফোন ও অপো। তৃতীয় স্থানে থাকা সত্ত্বেও আইফোনের বিক্রি বার্ষিক হিসাবে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে।
গত বছর অবশ্য চীনে অ্যাপলের কারখানায় একাধিকবার লকডাউনবিরোধী শ্রমিক বিক্ষোভ হয়েছে। মূলত সেখান থেকেই চীনের অন্যান্য কারখানা ও শহরে লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সে কারণে সে দেশে আইফোনের উৎপাদন কমে যায়।
বিশ্লেষকেরা বলেন, গত বছর বিশ্বজুড়েই মন্দার আশঙ্কা ছিল। উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো যে হারে নীতি সুদহার বাড়িয়েছে, তার জেরে তৈরি হয় মন্দার আশঙ্কা। একদিকে নীতি সুদহার বৃদ্ধির কারণে সমাজে অর্থের প্রবাহ কমে যায়। অন্যদিকে মন্দার আশঙ্কায় মানুষ কেনাকাটায় হিসেবি হয়—এ দুয়ের প্রভাবে স্মার্টফোন বিক্রি অনেকটা কমে যায়।