ইলন মাস্ক টুইটারের মালিকানা হাতে পাওয়ার পর কর্মী ছাঁটাই থেকে শুরু করে নানা ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই ধারার শেষ সংযোজন হচ্ছে, বিগত কয়েক বছরে টুইটারের যেসব অ্যাকাউন্ট নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছিল, সেগুলোর প্রতি ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণা করা।
তবে এই সিদ্ধান্ত তিনি নিজে থেকে নেননি। রীতিমতো জরিপ চালানোর পর তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জরিপে তিনি জানতে চান, যেসব অ্যাকাউন্ট আইন ভাঙেনি বা ঘৃণ্য প্রকৃতির স্প্যাম ছড়ায়নি, সেই সব অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে আনা উচিত হবে কি না। খবর বিবিসির
এই জরিপে ৩১ লাখ টুইটার ব্যবহারকারী অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ ব্যবহারকারী ‘হাঁ’ ভোট দেন। আর তাতেই তেতে উঠেছেন মাস্ক। বলেছেন, টুইটার ব্যবহারকারীরা সময় দিয়েছেন, সুতরাং আগামী সপ্তাহ থেকে এই ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হবে। উল্লেখ্য, টুইটারে ইলন মাস্কের অনুসারী আছেন প্রায় ১২ কোটি। এ উপলক্ষে টুইটারে একটি লাতিন শব্দবন্ধ ব্যবহার করেন তিনি—ভক্স পপুলি, ভক্স ডেই—জনগণের কণ্ঠস্বরই ঈশ্বরের কণ্ঠ।
তবে ঠিক কী প্রক্রিয়ায় ট্রাম্প এই সাধারণ ক্ষমা বাস্তবায়ন করবেন, তা বিস্তারিত বলেননি মাস্ক।
এর আগে গত শনিবার ইলন মাস্ক আরেক জরিপের ভিত্তিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট সচল করেন। যদিও ট্রাম্প টুইটারে আর ফিরবেন না বলে জানিয়ে বলেছেন, ‘এই প্ল্যাটফর্মে ফেরার কোনো যৌক্তিক কারণ দেখি না।’ তবে ২০২৪ সালের মার্কিন সাধারণ নির্বাচনে ট্রাম্প আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে ট্রাম্পের সমর্থকেরা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে হামলা চালালে তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়।
এদিকে টুইটার কেনার পর ইলন মাস্ক প্রথমেই ঘৃণা ভাষ্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। কিন্তু এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মালিকানা বদলের পরপরই হঠাৎ করে টুইটারে বিদ্বেষমূলক আক্রমণ অনেকটা বেড়ে গেছে। সম্প্রতি নিজেদের প্রতিবেদনে এমন দাবি করেছে ‘সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজিটাল হেট’ নামের একটি সংস্থা।
ওই ডিজিটাল পর্যবেক্ষণ সংস্থার গবেষকেরা বলেছেন, চলতি বছরের পুরো সময় টুইটারে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের বিরুদ্ধে যত ঘৃণা ভাষণ ছড়ানো হয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে তা ২৬ হাজার গুণ বেড়েছে। শুধু কৃষ্ণাঙ্গরাই নন, টুইটারের বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে বিদ্বেষমূলক আচরণের শিকার হচ্ছেন রূপান্তরকামী ও সমকামী পুরুষেরা। ছাড় পাচ্ছেন না ইহুদিরাও।
এই বাস্তবতায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো বিভেদ সৃষ্টিকারী নেতার টুইটার অ্যাকাউন্ট সচল হওয়া বড় উদ্বেগের কারণ বলেই মনে করছেন অনেকে। এমনও হতে পারে, এই টুইটার ব্যবহার করে ট্রাম্প আবারও ঘৃণা ছড়াবেন বা এমনকি ক্ষমতায়ও যাবেন, যদিও তিনি এখন টুইটার ব্যবহার করছেন না।