হামলার পর প্রেসিডেন্ট পদের জন্য ট্রাম্পকে প্রকাশ্য সমর্থন দিলেন ইলন মাস্ক

টেসলার কোটিপতি মালিক ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন জানিয়েছেন। এই প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে তিনি রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থীকে সমর্থন জানালেন। ইলন মাস্ক তাঁর সমর্থন জানিয়ে ট্রাম্পকে ‘শক্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের রক্তমাখা মুখের একটি ভিডিও শেয়ার করে ইলন মাস্ক তাঁর সমর্থনের কথা ঘোষণা করেন। গতকাল শনিবার পেনসিলভানিয়া রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্পের ওপর গুলি চালানো হলে গুলি তাঁর কানে লাগে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, রক্তাক্ত ট্রাম্প তাঁর মুষ্টিবদ্ধ হাত শূন্যে ছুড়ছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট অবশ্য নিরাপদে আছেন।

ইলন মাস্কের এই সমর্থন তাঁকে রাজনীতির ডান অংশে নিয়ে গেছে। অন্যদিকে ট্রাম্প একজন আলোচিত ব্যক্তির সমর্থন পেলেন। আগামী ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সামাজিক মাধ্যম এক্সে পোস্ট করা একটি বার্তায় পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যবসায়ী মাস্ক বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি এবং তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’

পরে আরেকটি পোস্টে ইলন মাস্ক লেখেন, ‘শহীদ বেঁচে আছেন’। তিনি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি বিতর্কের কথা উল্লেখ করে এটি লেখেন। রক্ষণশীল ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট পিটার থিয়েল এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির অর্থদাতা ও লিঙ্কডইনের সহপ্রতিষ্ঠাতা রিড হফম্যানের মধ্যে ওই বিতর্ক হয় বলে সংবাদে বলা হয়।

ইলন মাস্ক পরে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার আরেকটি ছবি পোস্ট করেন। ততে তিনি লেখেন, ‘সর্বশেষবার আমেরিকা যাকে এমন একজন শক্ত প্রার্থী হিসেবে পেয়েছিল, তিনি ছিলেন থিওডর রুজভেল্ট।’ এ বিষয়ে মাস্ক ও এক্সে তাঁর প্রতিনিধির বক্তব্য জানতে চাওয়া হলেও তাঁরা দ্রুত সাড়া দেননি।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্পর্কে ইলন মাস্ক তাঁর সমালোচনা সম্প্রতি জোরালো করেছেন। তিনি এমন একটি গোষ্ঠীকে চাঁদা দিয়েছেন, যাঁরা ট্রাম্পকে নির্বাচিত করার জন্য কাজ করছে। সূত্রের বরাত দিয়ে ব্লুমবার্গ গত শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে।

মাস্কের এই অবস্থান ট্রাম্পকে সুবিধা দেবে। এক্সে মাস্কের বিশাল সংখ্যক ফলোয়ার রয়েছে। প্রায় ১৮ কোটি ৯৫ লাখ। এর মানে হলো, তাঁর যেকোনো পোস্ট খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে মাস্ক একসময় জানিয়েছিলেন, তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও জো বাইডেনকে ভোট দিয়েছিলেন।

তবে কয়েক বছর ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম গ্রহণকারী ইলন মাস্ক ধীরে ধীরে ডানপন্থী চিন্তার দিকে ঝুঁকেছেন। বিশেষ করে বহুত্বের উদ্যোগ ও বাইডেনের অভিবাসন নীতির তীব্র সমালোচক হিসেবে তিনি আবির্ভূত হয়েছেন। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ রয়েছে, টেসলা ও রকেট কোম্পানি স্পেসএক্সের বিষয়ে ডেমোক্র্যাটদের ব্যবহার খুব ‘শীতল’।

গত মার্চে মাস্ক ও ধনী আরও কিছু অর্থদাতার সঙ্গে ট্রাম্প বৈঠক করেছিলেন বলে খবর বেরিয়েছিল।

২০২২ সালের জুলাই মাসে মাস্ক বলেছিলেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য ‘খুব বেশি বুড়ো’ এবং সাবেক প্রেসিডেন্টের উচিত ‘অস্তাচলের দিকে চলে যাওয়া’। সে সেময় মাস্ক আরও বলেছিলেন, তিনি ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডি’স্যান্টিসের দিকে ঝুঁকছেন। ট্রাম্প তখন তাঁর তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।

২০২২ সালের শেষের দিকে মাস্ক টুইটার থেকে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। এর আগে ৪৪ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে টুইটার কিনে মাস্ক এর নাম দেন এক্স। গত মাসে ট্রাম্প জানান, তিনি ‘ইলনের একজন ভক্ত’। বলেন, মাস্ক টেসলা নিয়ে চমৎকার কাজ করছেন।