তেল উৎপাদন কমাবে ওপেক
তেল উৎপাদন কমাবে ওপেক

২০২৫ সাল পর্যন্ত তেল উৎপাদন কমাবে ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো

তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো স্বেচ্ছায় তেল উৎপাদন হ্রাসের ধারা ২০২৫ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখবে। অর্থাৎ গত ডিসেম্বর মাসে তারা যে স্বেচ্ছায় দৈনিক ২২ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা আগামী ২০২৫ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বর মাসের সেই ঐকমত্য ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা ছিল। এরও আগে ২০২২ ও ২০২৩ সালে ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো স্বেচ্ছায় দৈনিক ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। মূলত বিশ্ববাজারের পড়তি চাহিদা ও যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত তেল উৎপাদনের সিদ্ধান্তের পাল্টা ব্যবস্থা নিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওপেক।

এ ছাড়া ২০২৫ সালে সদস্য ও সহযোগী দেশগুলোর উৎপাদন চাহিদা প্রকাশ করেছে ওপেক, চলতি বছরের চাহিদার সঙ্গে এর অবশ্য বিশেষ কোনো ব্যবধান নেই। এর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উৎপাদন কোটা দৈনিক তিন লাখ ব্যারেল বাড়ানো হয়েছে। ওপেক বলেছে, এই উৎপাদন বৃদ্ধি একবারে করা হবে না; ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে শুরু করে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত তা জারি রাখা হবে।

এদিকে নানা অনিশ্চয়তা থাকলেও বিশ্ববাজারে তেলের দাম উল্টো কমছে। একদিকে ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো তেলের উৎপাদন কমাচ্ছে; আরেক দিকে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান ভূরাজনীতির মধ্যে গত এপ্রিল মাসের শুরুতে তেলের দাম পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছালেও পরবর্তী সময়ে দাম ১০ শতাংশ কমেছে।

আজ সকালে বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি ৮১ দশমিক ৪৯ ডলার; এপ্রিলের শুরুতে এই তেলের দাম ছিল ৯১ ডলার। তখন সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলার জেরে তেলের বাজার হঠাৎ করেই চাঙা হয়ে গিয়েছিল।

এদিকে আজ সকালে ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি ৭৭ দশমিক ৭৭ ডলার।

সিএনএনের সংবাদে তেলের এই পড়তি দামের মূল কারণ হিসেবে দুটি বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড পরিমাণ তেল উৎপাদিত হওয়ার কারণে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ বেড়েছে; দ্বিতীয়ত, চীনের অর্থনৈতিক শ্লথগতির কারণে দেশটির চাহিদা নিয়ে অনিশ্চয়তা।

ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির সর্বশেষ প্রতিবেদনে চলতি বছরের তেলের চাহিদার পূর্বাভাস দৈনিক ১ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল হ্রাস করে ১১ লাখ ব্যারেলে নামিয়ে আনা হয়েছে। তারা মূলত উন্নত দেশের পড়তি চাহিদার ভিত্তিতে পূর্বাভাস হ্রাস করেছে, বিশেষ করে ইউরোপের চাহিদা।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়ার পূর্বাভাসের সঙ্গে জ্বালানিস্বল্পতার পূর্বাভাসও দেওয়া হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি ধারণা করছে, চলতি বছর বৈশ্বিক তেলের চাহিদা দৈনিক ৫ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল বাড়বে। মার্চে তারা বলেছিল, ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো চলতি বছর তেল উৎপাদন হ্রাসের ধারা অব্যাহত রাখলে ২০২৪ সালে সরবরাহ–সংকট হতে পারে।