ভারতে কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক (স্যাটেলাইট) স্পেকট্রাম বা তরঙ্গ নিলামের মাধ্যমে নয়; বরং প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরাসরি বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ নিয়ে বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়েছেন বিশ্বের দুই শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানি ও ইলন মাস্ক।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সাধারণত দুইভাবে কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক তরঙ্গ বণ্টন করা হয়। নিলামের মাধ্যমে অথবা সরাসরি বরাদ্দের মাধ্যমে। ভারতের জিয়ো, ভোডাফোন আইডিয়া, এয়ারটেল নিলামের পক্ষে। অন্যদিকে ইলন মাস্কের স্টারলিংক ও কুইপারের মতো কোম্পানি চায়, তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া হোক। খবর ইকোনমিক টাইমসের
মঙ্গলবার ইন্ডিয়ান মোবাইল কংগ্রেসের মঞ্চে এ বিতর্কের প্রভাব পড়েছে। কংগ্রেসে তরঙ্গ নিলামের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা তৈরি করতে লাইসেন্স ফি চালু ও তরঙ্গ কেনাবেচার পক্ষে মত দেন ভারতী এয়ারটেলের কর্ণধার সুনীল ভারতী মিত্তাল।
তারপরই নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে স্টারলিংকের কর্ণধার ইলন মাস্ক প্রশ্ন করেন, ভারতে তাঁর কোম্পানি পরিষেবা দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়বে কি না? যদিও পরে ওই মঞ্চেই ভারতের টেলিকমমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেন, সারা বিশ্বের মতো ভারতেও বণ্টন করা হবে স্যাটেলাইট তরঙ্গ। সে ক্ষেত্রে তরঙ্গের দর ও ফর্মুলা নির্ধারণ করবে টেলি নিয়ন্ত্রক সংস্থা ট্রাই।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া আরও বলেন, সারা পৃথিবীতে প্রশাসনিকভাবে তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া হয়। ফলে ভারতে নিলামের মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়া হলে তা হবে আন্তর্জাতিক রীতির পরিপন্থী।
ভারতের টেলিকম মন্ত্রীর এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন ইলন মাস্ক। এক্সে তিনি আরও বলেন, স্টারলিংক ভারতের মানুষকে সেবা দিতে চায়।
গত রোববার রয়টার্সের আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, তরঙ্গ বরাদ্দের প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি তুলেছে রিলায়েন্স। এমনকি তারা সরকারকে এই প্রক্রিয়া পুনরায় শুরুর আহ্বান জানায়।
ইলন মাস্ক আরও বলেছেন, যে তরঙ্গ বরাদ্দ নিয়ে কথা হচ্ছে, তা ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নভুক্ত (আইটিইউ) অভিন্ন তরঙ্গ। আইটিইউ জাতিসংঘের ডিজিটাল প্রযুক্তিবিষয়ক সংস্থা। ভারত এই সংস্থা প্রণীত এক আন্তর্জাতিক চুক্তির স্বাক্ষরকারী। এই চুক্তিতে বলা হয়েছে, তরঙ্গ বরাদ্দের ক্ষেত্রে যৌক্তিক ও সাশ্রয়ী পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।
এ ছাড়া কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মানুষের সুরক্ষার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও উন্নত প্রযুক্তি ঠিকঠাক ব্যবহারে নীতি কাঠামো তৈরির সময় এসেছে বলে বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বিষয়টি হলো, স্বচ্ছতার সঙ্গে তরঙ্গ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছিল জিয়ো। এরপরই মাস্ক বার্তা দেন, ভারতে তরঙ্গের নিলাম করা হলে তা হবে ‘অভূতপূর্ব’। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সিন্ধিয়ার মন্তব্যে সেই প্রশ্নের উত্তর মিলল।