আজ বুধবার বিশ্ববাজারে তেলের দাম আরও খানিকটা বেড়েছে। গাজার হাসপাতালে বোমা হামলায় প্রায় ৫০০ মানুষের মৃত্যুর পর মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় তেলের দাম আরও বেড়ে যায়। এ ঘটনায় তেল সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্সের দাম ১ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেলপ্রতি ৯১ দশমিক ৫৯ ডলারে উঠেছে। অন্যদিকে ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি হয়েছে ৮৮ দশমিক ৫০ ডলার।
মঙ্গলবার গাজার হাসপাতালে বোমা হামলায় প্রায় ৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়। তবে এ হামলার দায় এখন পর্যন্ত কেউ স্বীকার করেনি। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ একে অপরের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
এ ঘটনার জেরে জর্ডানে অনুষ্ঠেয় আরব নেতাদের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠক বাতিল হয়ে গেছে। কমনওয়েলথ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়ার বিশ্লেষক বিবেক ধর গ্রাহকদের উদ্দেশে এক নোটে বলেন, এ বৈঠক বাতিল হওয়ার মধ্য দিয়ে ইসরায়েল-হামাস সংকটের কূটনৈতিক সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা কমে গেল।
ইসরায়েল যে গাজায় স্থল অভিযান চালানোর হুমকি দিয়েছে, বাজার সে কারণে সতর্ক।
বিবেক ধর আরও বলেন, এমন আশঙ্কা আছে যে গাজা দীর্ঘ সময় ইসরায়েলি বাহিনীর দখলে থাকবে এবং তাতে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এ সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হলে ইরান সেখানে জড়িয়ে পড়তে পারে।
আজ বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইসরায়েল সফর করার কথা। হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন প্রদর্শনে বাইডেনের এই ইসরায়েল সফর। হোয়াইট হাউস বলেছে, বাইডেন চান এ সংঘাতের পরিসর না বাড়ুক, এ কথা তিনি পরিষ্কার করেই বলবেন।
এদিকে ১৩ অক্টোবর শেষ হওয়া সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের মজুত ৪৪ লাখ ব্যারেল কমেছে। যদিও বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস ছিল, তিন লাখ ব্যারেল তেল উত্তোলন করবে যুক্তরাষ্ট্র। আজ দিন শেষে মার্কিন সরকারের আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে।
এদিকে তেলের চাহিদার দিক থেকে সুখবর আছে। সেটা হলো বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে চীনের প্রত্যাশাতীত প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বুধবার চীনের বিভিন্ন সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সরকারের বিভিন্ন নীতিগত পদক্ষেপের কারণে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত হচ্ছে।
সেপ্টেম্বর মাসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত মাসে দেশটির তেল পরিশোধনাগারগুলোর উৎপাদন ১২ শতাংশ বেড়েছে। উৎপাদন খাতের গতি বৃদ্ধি ও উৎসব মৌসুমের কারণে চাহিদা বেড়েছে। তবে দেশটির আবাসন খাত যে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, তাতে দেশটির অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়ে বিশ্লেষকেরা সতর্কবাণী দিয়েছেন।
একই সঙ্গে সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রয় প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে। ফলে ফেড যে বছরের শেষ দিকে আবার নীতি সুদহার বৃদ্ধি করতে পারে, সেই সম্ভাবনা আরও জোরদার হচ্ছে।
এদিকে ভেনেজুয়েলার সরকার ও বিরোধী দলগুলো ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিষয়ে ঐকমত্যে এসেছে। এ ঘটনায় তাঁরা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বাজারে আবারও তেল সরবরাহ করতে পারে। তখন তেলের দাম কমতে পারে।