ভারতে আর ‘রাজকীয় সুবিধা’ পাবে না বহুজাতিক কোম্পানি

ভারতে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ব্র্যান্ড ভ্যালু বা রয়্যালটির ওপর আরোপিত কর দ্বিগুণ করেছে ভারতের সরকার। একই সঙ্গে এসব কোম্পানির প্রযুক্তিগত পরিষেবার মাশুলও দ্বিগুণ করা হয়েছে। খবর ইকোনমিক টাইমসের।

গত শুক্রবার ভারতের সংসদে ২০২৩–২৪ অর্থবছরের অর্থবিলের একটি সংশোধনী প্রস্তাব পাস করা হয়। সেখানেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ওপর আরোপিত এসব করহারের পরিবর্তন আনা হয়েছে।

বহুজাতিক কোম্পানিগুলো সারা বিশ্বেই তাদের ব্র্যান্ডের সুনাম বা রয়্যালটি বিক্রি করে থাকে। বিনিময়ে বিদেশি ব্র্যান্ডের নামে পণ্য বিক্রি করা প্রতিষ্ঠানগুলো মূল কোম্পানিকে নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ পরিশোধ করে। এটি রয়্যালটি ফি বা মাশুল বা ব্র্যান্ড ভ্যালু হিসেবে পরিচিত। ভারতের সংবাদমাধ্যম বলছে, এত দিন দেশটিতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ‘রাজকীয়’ যেসব সুবিধা পেত, তা এখন আর পাবে না। রয়্যালিটি কর বাড়ানোর মধ্য দিয়ে সেই পথেই হাঁটছে ভারত সরকার।

সংশোধিত অর্থবিলে রয়্যালটি মাশুলের ওপর আরোপিত কর দ্বিগুণ করেছে ভারত। ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানির ভারতীয় অংশ যেমন হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, পেপসিকো ইন্ডিয়া ও কোকা-কোলা ইন্ডিয়াকে এখন থেকে উচ্চ হারে কর দিতে হবে।

এ ছাড়া সংশোধিত অর্থবিলে এসব বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর প্রযুক্তিগত পরিষেবার মাশুলও ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে।
ভারতের অভ্যন্তরীণ আইন অনুসারে বহুজাতিক কোম্পানির জন্য সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ করের বিধান ছিল। কিন্তু দ্বিপক্ষীয় কর পরিহার চুক্তির আলোকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের এসব কোম্পানি এত দিন ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে আসছিল। এখন সেই কর বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করেছে ভারত।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সারা বিশ্ব থেকে যে পরিমাণে রয়্যালটি বাবদ আয় করে তার ৬০ শতাংশের বেশি আসে ভারত থেকে। ফলে ভারতের এ পদক্ষেপকে এই দুই দেশের বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য একটি বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে কর বৃদ্ধির এ নিয়ম জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলোর ভারতীয় অংশের জন্য প্রযোজ্য হবে না। কারণ, এসব দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় কর পরিহার চুক্তি অনুসারে ওই দুই দেশের কোম্পানিগুলোকে ১০ শতাংশের কম হারে কর দিতে হয়।

অন্যদিকে কেইম্যান আইল্যান্ড ও ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের মতো ট্যাক্স হেভেন অঞ্চল বলে পরিচিত দেশগুলোর মালিকানায় থাকা কোম্পানিগুলোকেও প্রযুক্তি পরিষেবা ও রয়্যালটি ফির ওপর এখন থেকে ২০ শতাংশ কর দিতে হবে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর বৃদ্ধির কারণে ভারতে প্রযুক্তিসেবা আমদানির ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে।