সাত মাস ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ব্যাহত হচ্ছে বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থা। এত দিন উভয় দেশ থেকেই গম আমদানি করতে পারেনি বাংলাদেশ, অথচ এই দুই দেশই বিশ্বের শীর্ষ গম উৎপাদক। এ ছাড়া মার্কিন ডলার না রাশিয়ার রুবল—কোন মুদ্রায় রাশিয়ার কাছ থেকে গম কেনা হবে, তা-ও একটা সমস্যা ছিল। সব সমস্যা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টন গম আনা হচ্ছে। আমদানি ব্যয় পরিশোধ করা হবে ডলারে।
আর ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে আনা হচ্ছে আতপ ও সেদ্ধ মিলিয়ে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন চাল। গম ও চাল মিলিয়ে আমদানি করা হচ্ছে ৮ লাখ ৩০ হাজার টন খাদ্যশস্য।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে চাল ও গম আমদানির তিনটি আলাদা প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল বারিক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বৈঠক শেষে প্রস্তাব অনুমোদনের কথা সাধারণত অর্থমন্ত্রীই জানিয়ে থাকেন, কিন্তু গতকাল তিনি সাংবাদিকদের সামনে আসেননি।
অতিরিক্ত সচিব আবদুল বারিক জানান, রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ টন গম আমদানি করা হবে সরকারি পর্যায়ে (জিটুজি)। এতে ২১ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার খরচ পড়বে, প্রতি টন ৪৩০ ডলার। প্রতি ডলার ৯৫ টাকা হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় মোট দাম পড়বে ২ হাজার ৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রতি কেজি গমের মূল্য ধরা হয়েছে ৪০ টাকা ৮৫ পয়সা।
কোন মুদ্রায় কেনা হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল বারিক জানান, ‘মুদ্রা নিয়ে আলোচনা হয়নি। আমাদের প্রস্তাবে টাকার অঙ্ক দেওয়া হয়েছে। তবে কেনা হবে ডলারে, সে হিসাবে ২১ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। প্রতি ডলার ৯৫ টাকা করে ধরা হয়েছে। প্রতি টন ৪৩০ মার্কিন ডলার।’
এদিকে ভারত থেকে জিটুজি পর্যায়ে এক,লাখ টন নন-বাসমতী সেদ্ধ চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। প্রতি টনের দাম পড়বে
৪৪৩ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় মোট ব্যয় হবে ৪১৭ কোটি ৫ লাখ টাকা। মোট চালের মধ্যে ৭০ হাজার টন চাল আসবে জাহাজে করে সমুদ্রবন্দর দিয়ে আর ৩০ হাজার টন আসবে রেলপথে।
এ ছাড়া ভিয়েতনাম থেকে জিটুজি পর্যায়ে আমদানি করা হবে দুই লাখ টন থাই নন-বাসমতী চাল।