‘আইকন অব দ্য সিজ’ তৈরিতে খরচ পড়েছে ২০০ কোটি ডলার
‘আইকন অব দ্য সিজ’ তৈরিতে খরচ পড়েছে ২০০ কোটি ডলার

বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল প্রমোদতরিতে ভ্রমণে কত খরচ পড়ছে

যাত্রা শুরু করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল প্রমোদতরি আইকন অব দ্য সিজ। যাত্রীদের মনোরঞ্জন করতে এই জাহাজে যে এলাহি ব্যবস্থা আছে, তার ফিরিস্তি দিলে অনেকেরই চোখ ছানাবড়া হওয়ার জোগাড় হবে। কী নেই এই জাহাজে—৭টি সুইমিংপুল, ৬টি ওয়াটার স্লাইড, ৪০টি রেস্তোরাঁ, ৫০ জনের বেশি সংগীতশিল্পী ও ১৬টি অর্কেস্ট্রা। বিভিন্ন শ্রেণির যাত্রীদের জন্য আছে বিভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা লাভের ব্যবস্থা।

আইকন অব দ্য সিজ সাত দিনব্যাপী এই যাত্রা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি সৈকত থেকে। যাত্রীদের ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখাবে তারা। পাশাপাশি ব্যবস্থা আছে নানা ধরনের বিনোদনের। জাহাজটির মালিকদের ওয়েবসাইট অনুসারে, এই জাহাজের ভাড়া ১ হাজার ৭২৩ ডলার থেকে শুরু করে ১৪ হাজার ২০৫ ডলার। তবে এটা স্থির নির্দিষ্ট বিষয় নয়, ভ্রমণের তারিখ, পথ, খাদ্য ও অন্যান্য সুবিধার ওপর ভিত্তি করে এই ভাড়া বদলে যেতে পারে।

হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, বিলাসবহুল এই প্রমোদতরি মোট আটটি আলাদা অংশে বিভক্ত। ডেক আছে মোট ২০টি। প্রতিটি ভাগের বৈশিষ্ট্য আলাদা, যেমন কোনো ভাগ তরুণ যুগলদের জন্য, আবার কোনোটি বৃদ্ধদের জন্য। আছে শিশুদের জন্য আলাদা এলাকাও, যেখানে কেবল শিশুদের জন্য নির্ধারিত সেবাই মিলবে। সেই সঙ্গে আছে প্রাপ্তবয়স্কদের বিশেষ অঞ্চল।

ডেকে যাত্রীদের জন্য যে মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা আছে, তাতে মানুষ একরকম ভুলে যাবে যে তারা জাহাজের ডেকে অবস্থান করছে। সেখানে যেমন শূন্যের ওপর খেলা দেখানো হচ্ছে, তেমনি বরফ ও পানিতে খেলা দেখানোর ব্যবস্থা আছে। সেই সঙ্গে থাকছে নাটকের মঞ্চায়ন।

যাত্রাপথে যাত্রীদের রয়্যাল ক্যারিবিয়ান প্রাইভেট আইল্যান্ডে এক দিন ও বাহামা দ্বীপপুঞ্জে এক দিন সময় কাটানোর ব্যবস্থা থাকবে।

আইকন অব দ্য সিজের দৈর্ঘ্য ৩৬৫ মিটার, ওজন ২ লাখ ৫০ হাজার ৮০০ টন। জাহাজের সবচেয়ে ওপরের ডেকে আছে ৪০টির বেশি বার, রেস্তোরাঁ, লাউঞ্জ ও বিনোদনস্থল। বিশাল এই জাহাজে থাকতে পারবেন অন্তত ৭ হাজার ৬০০ যাত্রী। যাত্রীদের সেবা ও জাহাজ পরিচালনায় আছেন ২ হাজার ৩৫০ কর্মী।

বিশালাকৃতির এই জাহাজ চালাতে আশ্রয় নেওয়া হয়েছে তুলনামূলক আধুনিক পদ্ধতির। জাহাজটির মূল জ্বালানি হিসেবে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হলেও এতে ফুয়েল সেল প্রযুক্তিও রাখা হয়েছে।

মহামারির পর মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে কিছু পরিবর্তন এসেছে। কেনাকাটায় ব্যয় কমিয়ে মানুষ এখন ভ্রমণ ও ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা নিতে আগ্রহী হয়ে উঠছে। সে জন্য বিলাসবহুল হোটেল ও রিসোর্টের কাটতি বাড়ছে। মানুষের এই বদলে যাওয়া মনোভাবের কারণে আইকন অব দ্য সিজের মতো বিলাসবহুল প্রমোদতরির ভাড়া যা–ই হোক না কেন, যাত্রীর অভাব হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।