ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির হার বাড়লেও ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেছেন, ফেড চলতি বছর নীতি সুদহার কমানোর লক্ষ্যমাত্রা থেকে সরে আসবে না। চলতি বছর তিনবার নীতি সুদহার হ্রাস করা হবে এবং সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারও ভালো থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান।
গতকাল বুধবার চলতি মাসের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে ফেডারেল রিজার্ভ। আগে ধারণা ছিল, মার্চ মাসেই নীতি সুদহার কমানো হবে। কিন্তু সেই পথে না হেঁটে ফেড নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রেখেছে। ফলে সে দেশের নীতি সুদহার এখন ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশের মধ্যে, ২৩ বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।
এ ছাড়া ফেডের অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের ২ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। প্রবৃদ্ধির এই গতি যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি। গত ডিসেম্বর মাসে ফেডের পূর্বাভাস ছিল, ২০২৪ সালে প্রবৃদ্ধি হবে ১ দশমিক ৪ শতাংশ; সেই তুলনায় এবারের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস যথেষ্ট বেশি।
একই সঙ্গে ফেড বলেছে, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্বের হার ৪ শতাংশে উঠতে পারে। বর্তমানে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৯, অর্থাৎ বেকারত্বের হার এখনকার চেয়ে তেমন একটা বাড়বে না। মূল্যস্ফীতির গুরুত্বপূর্ণ একটি সূচকেরও এ বছর পতন হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যদিও তার হার খুব একটা বেশি হবে না।
সুদের হার ক্রমান্বয়ে কমানো হলেও ফেডারেল রিজার্ভ মনে করছে, অর্থনীতি অতটা হোঁচট খাবে না, যদিও মহামারি-উত্তর সময়ে মূল্যস্ফীতির হার ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। জেরোম পাওয়েল বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে সতর্ক থাকবে, যে কথা তিনি আগেও বলেছেন।
চলতি বছর তিনবার নীতি সুদহার কমানোর কথা বলা হলেও কবে নাগাদ তা করা হবে, সে বিষয়ে পরিষ্কার কিছু বলেননি পাওয়েল।
আগের মতোই তিনি বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন নিশ্চিত হবে যে মূল্যস্ফীতির হার দুই শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার দিকে নামতে শুরু করেছে, তখনই কেবল এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেও মার্কিন অর্থনীতি ভালো করছে। নীতি সুদহার এত বৃদ্ধির পরও কেন অর্থনীতি ভালো অবস্থায় আছে, তা নিয়ে অর্থনীতিবিদেরা কিছুটা বিস্মিত হলেও মানুষের সমস্যা হচ্ছে না।
রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, ফেডারেল রিজার্ভের এই সিদ্ধান্ত বাইডেন প্রশাসন ভালোভাবে নেবে। সরকারও মনে করছে, প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকার পাশাপাশি বেকারত্বের হার কম থাকবে; এবং ব্যবসায়ী ও ভোক্তা শ্রেণির জন্য সুদের হার কম থাকবে।
ফেডের কর্মকর্তারা চলতি বছর তিনবার নীতি সুদহার হ্রাসের কথা বললেও জানিয়েছেন, আগামী বছর চারবার নয়, বরং তিনবার নীতি সুদহার হ্রাস করা হতে পারে। অর্থাৎ ফেড কিছুটা ধীরে চলো নীতিতেই চলবে।