রাশিয়া থেকে গত আগস্ট মাসে তেল আমদানি কমিয়েছে ভারত। গত মাসে ভারতের কিছু শোধনাগার অপরিশোধিত তেলের শোধন কমিয়ে দেওয়ার কারণে রুশ তেল আমদানি ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। এ কারণে ওই মাসে ভারত রাশিয়া থেকে প্রতিদিন ১৭ লাখ ব্যারেল তেল আমদানি করেছে। তবে এর বিপরীতে চীন রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়িয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জুলাই মাসে ভারত রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেলের আমদানি অনেকটা বাড়ানোয় রুশ তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল। তবে আগস্টে চীন রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়ানোর কারণে বেইজিং আবার রুশ তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতার অবস্থান দখল করেছে। তেল বহনকারী ট্যাংকারের তথ্যের ভিত্তিতে এই হিসাব পাওয়া গেছে।
আগস্টে ভারত যত তেল আমদানি করেছে, তার ৩৬ শতাংশ এসেছে রাশিয়া থেকে। এর আগের পাঁচ মাস ধরে রাশিয়া থেকে দেশটির তেল আমদানি বাড়ছিল। জুলাই মাসে ভারতীয় তেল আমদানির ৪৪ শতাংশই ছিল রুশ তেল। তবে আগস্টে রুশ তেলের আমদানি কমলেও একক দেশ হিসেবে রাশিয়াই ভারতের তেল আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস হিসেবে রয়ে গেছে। এরপর রয়েছে ইরাক ও সৌদি আরব।
ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ। ভোগের দিক থেকেও ভারতের অবস্থান তৃতীয়। আগস্টে দেশটি ৪৭ লাখ ব্যারেল তেল আমদানি করেছে। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জুলাই মাসের তুলনায় আগস্টে ভারতের তেল আমদানি ১ শতাংশ কমেছে।
২০২৩ সালের জুলাই মাসের পর সৌদি আরব থেকে ভারত গত আগস্ট মাসে সবচেয়ে কম তেল আমদানি করেছে। এর পরিমাণ ছিল প্রতিদিন ৪ লাখ ৯৮ হাজার ২০০ ব্যারেল।
চেন্নাই পেট্রোলিয়ামের দক্ষিণ ভারতে প্রতিদিন ২ লাখ ১০ হাজার ব্যারেল তেল শোধন করার সক্ষমতাসম্পন্ন ব্যবস্থা রয়েছে। এই শোধনাগারে কোম্পানিটি কিছু ইউনিট বন্ধ রেখেছে। অন্যদিকে ভারত পেট্রোলিয়াম মধ্য ভারতে অবস্থিত তাদের বিনা রিফাইনারিতে মেরামত চালাতে কিছু ইউনিট বন্ধ রেখেছে। ফলে ওই শোধনাগারে তেল প্রক্রিয়াজাত করার সুযোগ কমেছে।
কম দামে পাওয়ার কারণে ভারতীয় রিফাইনারিগুলো প্রচুর পরিমাণে রুশ তেল কিনছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর পশ্চিমা অনেক দেশ মস্কোর ওপর নানা রকম নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। পাশাপাশি এসব দেশ রাশিয়া থেকে তেল কেনা ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছে।
রয়টার্স যেসব তথ্য পেয়েছে, তাতে দেখা গেছে, গত মাসে ভারতীয় রিফাইনারিগুলো প্রতিদিন কানাডা থেকে ১ লাখ ৩৮ হাজার ব্যারেল ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ৫৪ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল কিনেছে। তবে আগস্টে রাশিয়ার তেল কেনা কমানোর কারণে ওপেক দেশগুলো থেকে ভারতের জ্বালানি কেনা চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ওপেক দেশগুলোর মধ্যে ইরাক থেকে ভারতের তেল কেনা বেশি বেড়েছে।