ফেডারেল রিজার্ভ
ফেডারেল রিজার্ভ

নীতি সুদহার কমাচ্ছে না ফেডারেল রিজার্ভ

নীতি সুদহার আপাতত কমাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ। ফেড আবারও বলেছে, সুদহার কমানোর পরিবেশ তৈরিতে এখনো তেমন একটা উন্নতি না হওয়ায় নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখা হবে।

ফেডের নীতি সুদহার এখন দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। গত বছরের জুলাই থেকে নীতি সুদহার ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। চলতি বছরের শুরুতে নীতি সুদহার কমানো হবে, এমন খবর বাজারে ছড়িয়ে পড়লেও চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাওয়ায় ফেড আপাতত সুদহার কমানোর পথে হাঁটছে না।

বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে, ঋণের সুদহার বেশি রেখে ফেড আশা করছে, অর্থনীতিতে চাহিদার রাশ টেনে ধরে রাখা সম্ভব হবে। অর্থাৎ চাহিদা কম থাকলে বাজারে পণ্যের সরবরাহ কমে যাবে, কমে যাবে কেনাবেচা; পরিণতিতে মূল্যস্ফীতির সূচক মাথা নামাবে।

এ পরিস্থিতিতে যেসব বিশ্লেষক একসময় বলেছিলেন যে ফেড এ বছরের শুরুতে নীতি সুদহার কমাতে পারে, তাঁরা এখন আর কোনো পূর্বাভাস দিচ্ছেন না। অনেকে আবার বলছেন যে ফেড উল্টো নীতি সুদহার বাড়াতে পারে।

নীতি সুদহার কমানোর পরিবেশ তৈরি হয়নি, এমন ঘোষণার পর গতকাল বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেন, সুদহার বাড়ানোর আশঙ্কা কম। তিনি আরও বলেন, ফেডের নীতিনির্ধারকেরা নিশ্চিত হতে চাইছেন যে মূল্যস্ফীতির চাপ কমতে শুরু করেছে। ফলে এ সিদ্ধান্তের বিষয় নির্ভর করবে তথ্য-উপাত্তের ওপর।

গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২২ সালের জুনে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ১। সে তুলনায় মূল্যস্ফীতির হার কমলেও এখনো তা ২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।

গতকালের এই ঘোষণার পর ফেডারেল রিজার্ভ মূল্যস্ফীতির এই প্রবণতায় আলোকপাত করে। তারা বলে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে অগ্রগতি হচ্ছে না।

ফিচ রেটিংসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ব্রায়ান কলটন বলেন, ফেডের ঘোষণায় মূল্যস্ফীতির যে প্রবণতা বিরাজ করছে, তার স্বীকৃতি আছে। এ পরিস্থিতিতে তাদের ধৈর্য ধরে থাকা ছাড়া আর কিছু করার নেই। এ ছাড়া চলতি বছর নীতি সুদহার হ্রাসের সম্ভাবনা কম বা অন্তত যে কয়েকবার কমানোর কথা ছিল, ততবার কমার সম্ভাবনা নেই।

জেরোম পাওয়েল আরও বলেন, অন্যান্য দেশ হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের আগে নীতি সুদহার হ্রাসের কথা ভাবতে পারে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এসব দেশের প্রবৃদ্ধির গতি কমে গেছে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধির গতি ভালো থাকায় তারা এখনই নীতি সুদহার হ্রাসের কথা ভাবছে না।

এ ছাড়া ফেডের হাতে এখন যে পরিমাণ ট্রেজারি বন্ড আছে, সেসব বন্ড যে হারে তারা ছেড়ে দেবে বলে ভেবেছিল, সে গতি তারা কিছুটা কমিয়ে দিতে পারে।

২০২০ সালে মহামারির সময় অর্থনীতিকে প্রণোদনা দিতে ফেডারেল রিজার্ভ বিপুল পরিমাণ ট্রেজারি বন্ড কিনেছিল। দুই বছর পর অর্থাৎ ২০২২ সালে তারা ট্রেজারি বন্ড ছেড়ে দিতে শুরু করে।