ক্ষমতায় থাকতে ভারতকে ‘শুল্কের রাজা’ আখ্যা দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি তিনি আবার একই সুরে কথা বলেছেন। এবার তাঁর বক্তব্য, ভারত আমদানি শুল্কের ‘অপব্যবহার’ করছে। তাঁর এই বক্তব্যের জবাব দিয়েছে ভারতের বাণিজ্য পরামর্শদাতা সংস্থা জিটিআরআই।
জিটিআরআই বলেছে, ট্রাম্পের ওই বক্তব্য ‘অন্যায্য’। তিনি হাতে গোনা কয়েকটি পণ্যের উদাহরণ দিয়ে নিজের বক্তব্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন। বাস্তবতা হলো পৃথিবীর সব দেশ বিশেষ বিশেষ বা নির্দিষ্ট কিছু শিল্পে সুরক্ষা দেয়। অর্থাৎ এসব শিল্পের উৎপাদিত পণ্য যেন আমদানি করা একই পণ্যের চেয়ে কম দামে সে দেশের মানুষ কিনতে পারে, তার ব্যবস্থা করে। সে জন্য ওই সব পণ্য আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়। এমনকি খোদ যুক্তরাষ্ট্রও তার ব্যতিক্রম নয়। খবর দ্য হিন্দু
জিটিআরআই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ‘ওয়ার্ল্ড ট্যারিফ প্রোফাইলস ২০২৩’ তুলে ধরে ট্রাম্পকে জবাব দিয়েছে। দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে দুগ্ধজাত পণ্যে ১৮৮ শতাংশ, ফল ও সবজিতে ১৩২ শতাংশ, খাদ্যশস্যে ১৯৩ শতাংশ, তৈলবীজে ১৬৪ শতাংশ আমদানি শুল্ক আছে।
জিটিআরআই আরও বলেছে, ভারতের গড় শুল্ক হার ১৭ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের গড় শুল্কহার ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভারতের শুল্ক অনেক বেশি তা সত্য। কিন্তু ভারতের শুল্কহার অন্যান্য বড় অর্থনীতির কাছাকাছি। যেমন দক্ষিণ কোরিয়ার গড় শুল্ক হার ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং চীনের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
জিটিআরআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ভারতের ইচ্ছা থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র মুক্তবাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে শুল্ক হ্রাস করতে রাজি নয়। ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্কেই এই বিষয়টি পরিষ্কার; সেখানে শুল্ক হ্রাসের কোনো আলোচনাই নেই। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রও এ বিষয়ে সতর্ক।
শ্রীবাস্তব আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বাজারে বিনা শুল্কে পণ্য বিক্রি করতে চাইলে তাদের উচিত হবে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি সইয়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখা। ভারতে শুল্কসংক্রান্ত অনেক ঝামেলা আছে স্বীকার করে নিয়েও তিনি বলেন, তাই বলে ভারতকে ‘শুল্কের রাজা’ আখ্যা দেওয়া সাজে না।
কিছু পণ্যে ভারত উচ্চ হারে আমদানি শুল্ক আরোপ করেছে, তা ঠিক। তবে ট্রাম্প অপরিহার্যতার দিকটি এড়িয়ে গিয়েছেন; তিনি বেশি শুল্কের হাতে গোনা কয়েকটি পণ্যের উদাহরণ দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন অজয় শ্রীবাস্তব।