বিশ্ববাজারে ধারাবাহিকভাবে পড়ছে অপরিশোধিত তেলের দর। শুক্রবার প্রায় ৫ শতাংশ কমেছে সব ধরনের অপরিশোধিত তেলের দর, নেমেছে আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে নিচে। সেদিন এক সময়ে ব্রেন্ট ক্রুডের(অপরিশোধিত) দাম কমে দাঁড়ায় ৮৫ দশমিক ৫০ ডলার। ডব্লিউটিআই ৭৮ দশমিক ৯১ ডলার। গতকাল এই প্রতিবেদন লেখার সময় ডব্লিউটিআইয়ের(অপরিশোধিত) দাম আরও কমে দাঁড়ায় ৭৮ দশমিক ৭৪ ডলার এবং ব্রেন্ট ক্রুডের দাম দাঁড়ায় ৮৬ দশমিক ১৫ ডলার।
শুধু তেলের দামই নয়, বিশ্ববাজারে গ্যাসোলিনের দাম গত বুধবারের আগপর্যন্ত টানা ৯৮ দিন কমেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গ্যালনপ্রতি গ্যাসোলিনের দাম ৩ দশমিক ৬৯ ডলারে নেমে আসে গত শুক্রবার, ১৪ জুন যা ছিল ৫ দশমিক শূন্য ২ ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভসহ বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ব্যাংক মূল্যবৃদ্ধি রুখতে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে চলেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মন্দার আশঙ্কা। ঠিক এমন সময় ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে মার্কিন ডলার। চলতি বছর ডলারের বিনিময় মূল্য ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দুইয়ের জেরেই পতন ঘটেছে অশোধিত তেলের দরের।
এর আগে দুই বছর আগে বিশ্বজুড়ে লকডাউনের সময় বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম তলানিতে নেমেছিল। কিন্তু তখনো তার সুফল পায়নি মানুষ। কারণ, তখন বিশ্বের অর্থনৈতিক কার্যক্রম একরকম বন্ধ ছিল। কিন্তু এখন সবকিছুই স্বাভাবিক। এ সময় মানুষ তেলের পড়তি দামের সুবিধা পাওয়ার কথা, কিন্তু ডলারের উচ্চ বিনিময় মূল্যের কারণে সেটা খুব একটা হবে না বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
গত বছরের এই সময় থেকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকে। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে তেলের
দর ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। দাম বাড়তে বাড়তে একসময় প্রতি ব্যারেল ১৩০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। সেই হিসাবে, তেলের দাম তারপর ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
আশঙ্কা ছিল, রাশিয়ার তেল বাজারে আসতে না পারলে দাম আরও বেড়ে যাবে। কিন্তু সব আশঙ্কার মুখে ছাই দিয়ে রাশিয়া অপরিশোধিত তেল রপ্তানি অব্যাহত রাখে। এতে তেলের বাজার একরকম স্থিতিশীল।