গম খেত
গম খেত

২০২৪–২৫ মৌসুমে বিশ্বে গম উৎপাদন কমতে পারে: আইজিসি

ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) গম উৎপাদন কমে যাবে। এ আশঙ্কায় ২০২৪-২৫ মৌসুমের জন্য বিশ্বব্যাপী গম উৎপাদনের পূর্বাভাস সংশোধন করেছে ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইন কাউন্সিল (আইজিসি)।

আইজিসির মাসিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২৪-২৫ মৌসুমে বিশ্বব্যাপী গম উৎপাদন হতে পারে ৭৯ কোটি ৬০ লাখ টন; আগের পূর্বাভাসের তুলনায় যা ২০ লাখ টন কম। এ সময় ইইউভুক্ত দেশগুলোয় ১২ কোটি ৩ লাখ টন গম উৎপাদন হতে পারে, আগের পূর্বাভাস ছিল ১২ কোটি ১৮ লাখ টন। ২০২৩-২৪ মৌসুমে ইইউভুক্ত দেশগুলোয় ১৩ কোটি ৩১ লাখ টন গম উৎপাদন হয়েছিল। খবর রয়টার্সের

খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত ফ্রান্স ও জার্মানির মতো বৃহৎ উৎপাদনকারী দেশে অতিবৃষ্টির মতো বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইইউভুক্ত দেশগুলোয় গম উৎপাদন কমে যেতে পারে। বিশেষ করে ফ্রান্সে গম উৎপাদন অনেকটা কমে যাবে বলে শঙ্কা। চলতি মৌসুমে ফ্রান্সের গম উৎপাদন গত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যেতে পারে।

এদিকে ইউরোপে বৃষ্টি বেশি হলেও অস্ট্রেলিয়ায় বৃষ্টি কম হচ্ছে। সে জন্য সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন অ্যাগ্রিকালচারাল সার্ভিসেস (এফএএস) ২০২৪-২৫ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার গম উৎপাদনের পূর্বাভাস ৩৫ লাখ টন কমিয়ে ২ কোটি ৮৫ লাখ টনে নামিয়ে এনেছে। খবর ওয়ার্ল্ড গ্রেইনের

২০২৪-২৫ মৌসুমের জন্য বিশ্বব্যাপী ভুট্টা উৎপাদনের পূর্বাভাসও সংশোধন করেছে আইজিসি। এ ক্ষেত্রে অবশ্য সুসংবাদ দিয়েছে তারা। বলেছে, গম উৎপাদন কমলেও ভুট্টা উৎপাদন বাড়তে পারে।

পূর্বাভাসে আইজিসি জানায়, ২০২৪-২৫ মৌসুমে বিশ্বব্যাপী ১২২ কোটি ৫০ লাখ টন ভুট্টা উৎপাদন হতে পারে, আগের পূর্বাভাসের তুলনায় যা ১০ লাখ টন বেশি।

এ সময় আফ্রিকার দেশগুলোয় ৯ কোটি ১০ লাখ টন ভুট্টা উৎপাদন হতে পারে, আগের পূর্বাভাসে যা ছিল ৮ কোটি ৬৮ লাখ টন। তা সত্ত্বেও ২০২৩-২৪ মৌসুমের তুলনায় আফ্রিকায় ভুট্টার উৎপাদন কমবে, আগের মৌসুমে মোট ভুট্টা উৎপাদিত হয় ৯ কোটি ৩৮ লাখ টন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভুট্টা উৎপাদনের পূর্বাভাস কিছুটা হ্রাস করেছে আইজিসি। তারা বলছে, ২০২৪-২৫ মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রে ৩৮ কোটি ৪৬ লাখ টন ভুট্টা উৎপাদন হতে পারে। আগের পূর্বাভাস ছিল ৩৮ কোটি ৬২ লাখ টন।

একই সঙ্গে ২০২৪-২৫ মৌসুমে সয়াবিন উৎপাদনের পূর্বাভাস ২০ লাখ টন কমানো হয়েছে। নতুন পূর্বাভাস, আগামী মৌসুমে ৪১ কোটি ৯০ লাখ টন সয়াবিন উৎপাদিত হবে। মূলত যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কায় এই পূর্বাভাস হ্রাস করা হয়েছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্ববাজারে গমের দাম বেড়েছে। ফলে বেড়েছে আটার দাম। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। এ বাস্তবতায় আগামী মৌসুমে বিশ্বে গম উৎপাদন কমলে আটার দাম আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বৈরী আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিশ্বব্যাপী শস্য উৎপাদন কমছে। বৈশ্বিক খাদ্যনিরাপত্তায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।