অভ্যন্তরীণ মজুত ধরে রাখা ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে সেদ্ধ চাল রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারত সরকার। গতকাল ২৫ আগস্ট এ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করা হয়, যা আগামী ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়।
ইকোনমিক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, রপ্তানির উদ্দেশ্যে যেসব সেদ্ধ চাল ইতিমধ্যে শুল্কায়নের জন্য কোনো ভারতীয় বন্দরে রয়েছে এবং রপ্তানির জন্য ২৫ আগস্টের আগে বৈধ ঋণপত্র খোলা হয়েছে, সেসব চাল নতুন আরোপিত শুল্কের আওতার বাইরে থাকবে।
সর্বশেষ এ নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে সব ধরনের অবাসমতী চাল রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করল ভারত।
এর আগে গত ২১ জুলাই অবাসমতী সাদা চাল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল দেশটি। ওই নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ছিল অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়ানো ও আসন্ন উৎসব মৌসুমের সময় চালের খুচরা দাম নিয়ন্ত্রণ করা। উল্লেখ্য, ভারত থেকে রপ্তানি হওয়া চালের প্রায় ২৫ শতাংশ অবাসমতী সাদা চাল। তারও আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছিল ভারত।
বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত। ২০২২-২৩ সালে দেশটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার টন বাসমতী চাল রপ্তানি করে। একই সময়ে দেশটি থেকে ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯০ হাজার টন অবাসমতী চাল রপ্তানি করা হয়। গত এক বছরে ভারতীয় চালের আন্তর্জাতিক বিক্রি বেড়েছে ৩৫ শতাংশ। এটি গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের এপ্রিল-জুন সময়ে ১৫ লাখ ৫৪ হাজার টন অবাসমতী সাদা চাল রপ্তানি করে ভারত।
এই রপ্তানি বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশটিতে খাদ্যপণ্যের দামও বেড়েছে। গত জুলাই মাসে ভারতে খুচরা মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এটি গত ১৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। ভারতের খাদ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত এক বছরে দেশটিতে চালের দাম ১১ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, এসব কারণে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে শেষ পর্যন্ত অবাসমতী সাদা চাল রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত।
বিশ্ববাজারে ভারত যে পরিমাণ চাল রপ্তানি করে, তা রপ্তানি বাজারের ৪০ শতাংশের বেশি। ফলে তারা চাল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় অন্য আমদানিকারক দেশে চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ বাড়তে পারে। বাংলাদেশও ভারত থেকে অবাসমতী সেদ্ধ চাল আমদানি করে।
ভারত সাম্প্রতিক সময়ে আরও কিছু পণ্য রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে যেমন অভ্যন্তরীণ মজুত ও প্রাপ্যতা বাড়াতে মাত্র এক সপ্তাহ আগে ভারত পেঁয়াজের ওপর ৪০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছে।