যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী

লিজ ট্রাসের পদত্যাগে নতুন বাজেট নিয়ে অনিশ্চয়তা

লিজ ট্রাস
ফাইল ছবি: রয়টার্স

দেড় মাস আগে ক্ষমতায় আসার পরই সংক্ষিপ্ত বাজেট দেয় লিজ ট্রাসের নেতৃত্বাধীন যুক্তরাজ্যের নতুন সরকার। কিন্তু সেই সংক্ষিপ্ত বাজেট জাতিকে সংকট থেকে বের করা তো দূরের কথা, উল্টো নতুন সংকট সৃষ্টি করল। এর জেরে অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়। তখন লিজ ট্রাস বলেছিলেন, এই ভুলের জন্য তিনি ক্ষমা চান, তবে পদত্যাগ করবেন না। কিন্তু সেই কথা রাখতে পারলেন না তিনি।

কনজারভেটিভ পার্টির ভেতরে প্রবল চাপের মুখে পড়ে পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। ছয় সপ্তাহ আগেই ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এই ছয় সপ্তাহের মধ্যেই তাঁর অর্থনীতিসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত সমালোচনার মুখে পড়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বলে বিবিসির খবর।

তিন সপ্তাহ আগে ঘোষিত সংক্ষিপ্ত বাজেটের প্রায় পুরোটাই গত মঙ্গলবার বাতিল করে দেন যুক্তরাজ্যের নতুন অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। জানিয়েছেন, ন্যূনতম আয়কর থাকছে ২০ শতাংশতেই, ট্রাস যা কমিয়ে ১৯ শতাংশ করেছিলেন। ট্রাস তাঁর ‘সংক্ষিপ্ত বাজেটে’ আগামী দুই বছরের জন্য বিদ্যুৎ বিলের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে হান্ট জানান, দুই বছর নয়, আগামী এপ্রিল পর্যন্ত এই নিয়ম চালু থাকবে। তারপর অর্থনীতির অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ছাড়া বিদেশি পর্যটকদের জন্য সরাসরি ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্সে (ভ্যাট) ছাড়ের যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাস, তা-ও বাতিল করে দিয়েছেন নতুন অর্থমন্ত্রী।

এর আগে গত শুক্রবার সংক্ষিপ্ত বাজেটের দুটি প্রস্তাব ফিরিয়ে নেন লিজ ট্রাস নিজেই। তিনি আগে ঘোষণা করেছিলেন, শিল্পের করপোরেট কর ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৯ শতাংশ করা হবে। এ ছাড়া সে দেশের সর্বোচ্চ করদাতা যাঁরা, তাঁদের জন্য করের ঊর্ধ্বসীমা ৪৫ থেকে কমিয়ে ৪০ শতাংশ করতে চেয়েছিলেন ট্রাস। কিন্তু চাপের মুখে শুক্রবার ট্রাস জানান, দুই ক্ষেত্রেই এই কর ছাড় আপাতত চালু করা হচ্ছে না।

নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, ৩১ অক্টোবর পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করার কথা। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে দেরি করতে চাননি হান্ট। গত মঙ্গলবার তিনি হাউস অব কমন্সে বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন। নতুন অর্থমন্ত্রীর দাবি, অর্থনৈতিক সংকটে হাবুডুবু খাওয়া ব্রিটেনকে নতুন দিশা দেখাবে এসব প্রস্তাব। কিন্তু এর মধ্যে লিজ ট্রাস পদত্যাগ করায় তাঁর বাজেটের কী হবে, তা এখন কেবল সময়ই বলতে পারে।