জাপানি মুদ্রা ইয়েনসহ বিশ্বের বিভিন্ন শক্তিশালী অর্থনীতির মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলার শক্তিশালী হয়েছে। আজ সোমবার সকালে বিশ্ববাজারে মার্কিন ডলারের এই তেজি ভাব দেখা গেছে। মূলত গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রর কর্মসংস্থানের পরিসংখ্যান প্রকাশিত হওয়ার পর ডলারের পালে এই হাওয়া লেগেছে।
আজ সকালে বিশ্ববাজারে প্রতি ডলারের বিপরীতে ১৪৯ দশমিক ১০ ইয়েন পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে গত ১৬ আগস্টের পর এটাই ইয়েনের সর্বনিম্ন দর। গত সপ্তাহে ইয়েনের দরপতন হয়েছে ৪ শতাংশের বেশি; ২০০৯ সালের পর এটাই ইয়েনের সর্বোচ্চ সাপ্তাহিক দরপতন।
আজ দ্য ইউএস ডলার ইনডেক্সের মান অপরিবর্তিত আছে। এর আগে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এই সূচকের মান বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ; এটি ৭ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত সপ্তাহে এই সূচক বেড়েছে ২ শতাংশের বেশি, গত দুই বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। প্রতি ডলারের বিপরীতে ইউরোর মান এখন ১ দশমিক শূন্য ৯; গত সপ্তাহে ইউরোর দরপতন হয়েছে শূন্য দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যাশাতীত কর্মসংস্থান হয়েছে। সে মাসে টানা দ্বিতীয় মাসের মতো বেকারত্ব কমেছে। বেকারত্বের হার গত আগস্ট মাসে ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে তা ৪ দশমিক ১ শতাংশে নেমে এসেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন শ্রম বিভাগ। অর্থাৎ মার্কিন অর্থনীতি বেশ চাঙা। এই বাস্তবতায় বাজারসংশ্লিষ্ট মানুষেরা মনে করছেন, ফেডারেল রিজার্ভ শিগগিরই বেশি হারে নীতি সুদ কমাবে না।
সেই সঙ্গে আরও কিছু কারণে মার্কিন ডলার চাঙা থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বহুজাতিক গবেষণা সংস্থা পিপারস্টোনের গবেষণাপ্রধান ক্রিস ওয়েস্টন রয়টার্সকে বলেন, নীতি সুদহার এখন ধারাবাহিকভাবে কমবে, সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক পূর্বাভাস শক্তিশালী। অন্যদিকে চীন অর্থনীতি চাঙা করতে এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি ডলারের প্রণোদনা ঘোষণা করেছে—এই বাস্তবতায় মার্কিন ডলার বেশ চাঙা থাকবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
ক্রিস ওয়েস্টন আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে এবং সেই সঙ্গে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও দেখা যাচ্ছে, চলতি সপ্তাহের শেষে বা আগামী সপ্তাহের শুরুতে মুদ্রাবাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা কম।