দুবাই
দুবাই

সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলোও ছুটছে দুবাইয়ে

এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের ধনীদের আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের শহর দুবাই। সে কারণে এশিয়ার সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলো একের পর এক দুবাই শহরে কার্যালয় খুলছে। বিশেষ করে চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যকার উষ্ণ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুযোগ নিচ্ছে তারা। ধনীরা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ার যে নীতি গ্রহণ করেছেন, তার ওপর বাজি ধরেছে এই কোম্পানিগুলো।

সম্পদ ব্যবস্থাপকেরা বলেছেন, উপসাগরীয় অঞ্চলের আর্থিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছে দুবাই। এশিয়া, বিশেষ করে চীনের অনেক ধনী মানুষ এখন দুবাইয়ের অনুকূল নীতির সুযোগ নিতে আরব আমিরাতে পাড়ি জমাচ্ছেন। খবর রয়টার্স

চীনের অন্যতম শীর্ষ সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান নোয়া হোল্ডিংস চলতি বছরের শেষ নাগাদ দুবাইয়ে ব্যবসা করার লাইসেন্স পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কোম্পানির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা কিং প্যান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, চীনের যে ব্যবসায়ীরা দুবাইয়ে পাড়ি জমাচ্ছেন, মূলত তাঁদের সেবা দিতেই এই আয়োজন।

নোয়ার কৌশল হলো, গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান সম্পদের দেখভাল করা। কিং প্যান বলেন, সে জন্য তাঁদের দুবাই যেতে হবে। সেখানে তাঁদের গ্রাহকেরা যে সম্পদ সৃষ্টি করছেন, তার দেখভাল করতে। তিনি আরও বলেন, প্রথমে চীন থেকে কিছু কর্মীকে দুবাই পাঠানো হবে; এরপর সেখান থেকে স্থানীয়ভাবে নিয়োগ দেওয়া হবে।

কিং প্যান আরও বলেন, চীনের অনেক উদ্যোক্তা নতুন বাজারের খোঁজ করছেন; সরবরাহব্যবস্থা বহুমুখীকরণের চেষ্টা করছেন। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, চীনের ব্যবসায়ীদের অনেকেই সেই সুযোগ নিতে মুখিয়ে আছেন।

চীনের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের সম্পর্কোন্নয়ন হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ, তাইওয়ান নিয়ে মতভেদসহ বিভিন্ন কারণে পশ্চিমাদের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। এ বাস্তবতায় মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে তাদের সম্পর্কোন্নয়ন হচ্ছে।

কোভিড-১৯ মহামারির পর বিদেশি বাসিন্দা ও বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে দুবাই। কর ছাড়, নিরপেক্ষ ভূরাজনৈতিক অবস্থান, সুবিধাজনক ভৌগোলিক অবস্থানসহ নানা কারণে দুবাই বিশ্বের ধনী মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। গোল্ডেন ভিসা দিয়ে বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), বিশেষ করে দেশটির অন্যতম প্রধান শহর দুবাই। এর বদৌলতে শহরটির আবাসন বাজার বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে কৃত্রিম দ্বীপ বানিয়ে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে আরব আমিরাত।

রয়টার্সের সংবাদে সম্পদ ব্যবস্থাপকদের উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, একসময় অফশোর বিনিয়োগকারীদের প্রধান আকর্ষণ ছিল হংকং ও সিঙ্গাপুর। কিন্তু তাদের অনেক গ্রাহক এখন বাজার সম্প্রসারণের চেষ্টা করছেন; সে ক্ষেত্রে তাদের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে দুবাই।

ক্যাপজেমিনির সম্পদ প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সালে বিশ্বের অতিধনী মানুষের সংখ্যা ৩ দশমিক ৩ শতাংশ কমে ২১ দশমিক ৭ মিলিয়ন বা ২ কোটি ১৭ লাখে নেমে এসেছে; কিন্তু সে বছর মধ্যপ্রাচ্যে অতিধনী মানুষের সংখ্যা ২ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।

২০২২ সালে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ধনী মানুষের আগমন ঘটেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে; ২০২৩ সালে সেখানে আরও ৪ হাজার ৫০০ ধনী মানুষ এসেছেন।

এই প্রবণতার ওপর ভর করে সিঙ্গাপুরভিত্তিক পারিবারিক প্রতিষ্ঠান ফারো ক্যাপিটাল দুবাইয়ে কার্যালয় স্থাপন করেছে। আরও বিভিন্ন কোম্পানি দুবাইয়ে কার্যালয় স্থাপনের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।