ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন টেসলার এক শেয়ারহোল্ডার। অভিযোগ, ২০২২ সালের শেষভাগে ইলন মাস্ক ইনসাইডার ট্রেডিং বা অভ্যন্তরীণ তথ্য ব্যবহারের মাধ্যমে ৭৫০ কোটি ডলার মূল্যের শেয়ার বিক্রি করেছিলেন।
মূলত সেই সময় টেসলার উৎপাদন ও বিক্রি কমে যাওয়ার পরিসংখ্যান জনসমক্ষে প্রকাশিত হওয়ার আগেই ইলন মাস্ক এই শেয়ার বিক্রি করেছিলেন বলে অভিযোগ এবং সে কারণেই এই মামলা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, টেসলার শেয়ারহোল্ডার মাইকেল পেরি মামলার বিবরণে বলেছেন, ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি আগের বছরের চতুর্থ প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর টেসলার শেয়ারের দাম পড়ে যায়। পেরির অভিযোগ, ইনসাইডার ট্রেডিং করে ইলন মাস্ক অযথাযথভাবে ৩০০ কোটি ডলার মুনাফা করেন।
মামলার বিবরণে আরও বলা হয়েছে, ইলন মাস্ক টেসলায় নিজের অবস্থানগত সুবিধা কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন; এই প্রক্রিয়ায় তিনি কোম্পানির সর্বোচ্চ স্বার্থ বা মুনাফা নিশ্চিত করেননি। আদালতের কাছে মামলার বাদীর আবেদন, এই প্রক্রিয়ায় ইলন মাস্ক যে মুনাফা করেছেন, তা যেন ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে অভিযোগ, টেসলার পরিচালকেরাও ইলন মাস্ককে এভাবে শেয়ার কেনাবেচা করতে দিয়ে কোম্পানির স্বার্থ সংরক্ষণে গাফিলতি করেছেন।
মামলার বিবরণে আরও বলা হয়েছে, ২০২২ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের বিভিন্ন দিনে ইলন মাস্ক এসব শেয়ার বিক্রি করেন।
এ বিষয়ে রয়টার্স ইলন মাস্ক ও টেসলার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পায়নি তারা।
মামলার বিবরণে বাদী বলেছেন, ২০২২ সালে ইলন মাস্ক বলেছিলেন, টেসলার গাড়ির চাহিদা ভালো। কিন্তু এরপর তাৎক্ষণিক বিক্রয়ের তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে মাস্ক যখন দেখলেন যে বেচাকেনা ভালো নয়, তখন সেই তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশিত হওয়ার আগেই তিনি শেয়ার বিক্রি করে দেন। এ প্রক্রিয়ায় তিনি অনৈতিকভাবে মুনাফা করেন।
বেচাকেনার পরিস্থিতি ভালো না হওয়ায় ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে টেসলার গাড়ির দাম কমানোর ঘোষণা দিলে শেয়ারের দামে প্রভাব পড়ে যায়। কিন্তু মাস্ক তার আগেই শেয়ার বিক্রি করে লাভবান হন। বেচাকেনার পরিসংখ্যান প্রকাশিত হওয়ার পর শেয়ার বিক্রি করলে মাস্কের মুনাফা ৫৫ শতাংশ কমে যেত।
এমনিতেই ইলন মাস্ক নানা ধরনের ঝামেলায় আছে, সেই সঙ্গে এই মামলা নতুন করে তাঁর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর বার্ষিক বেতন–ভাতার প্যাকেজ অনুমোদন নিয়ে ঝামেলা চলছে। টেসলার পরিচালনা পর্ষদে প্রস্তাবিত এই পারিশ্রমিক প্যাকেজ নিয়ে আগামী ১৩ জুন ভোটাভুটি হওয়ার কথা। এর আগে জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য ডেলাওয়ারের এক আদালত এই বেতন-ভাতা অতিরিক্ত বলে খারিজ করে দেয়। আদালত বলে, কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ মাস্কের এই বিপুল পরিমাণ পারিশ্রমিকের ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
এ ছাড়া ২০২২ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার কেনার পর মাস্ক যখন তার নাম পাল্টে এক্স রাখেন, তখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করেছেন কি না, তা নিয়েও তদন্ত চলছে। যদিও মাস্ক বারবার বলে আসছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অহেতুক তাঁর সঙ্গে ঝামেলা করছে।